ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন হল ২ অক্টোবর ১১৮৭ সাল। এই দিনে, মুসলিম বিশ্বের কিংবদন্তি বীর এবং কূটনীতিক সালাহউদ্দিন আইয়ুবী অবশেষে বায়তুল মোকাদ্দাস (আল আকসা, জেরুজালেম) শহরটি খ্রিস্টান ক্রুসেডারদের থেকে পুনরুদ্ধার করেন। দীর্ঘ ও পরিকল্পিত যুদ্ধের পর এই বিজয় অর্জিত হয়।
শুধু জয় নয়, মানবতার দৃষ্টান্ত
এই বিজয় কেবল একটি ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার ছিল না। বরং, এটি মুসলিম জাতির আত্মমর্যাদা, ঐক্য এবং মানবিক নেতৃত্বের প্রতীক হয়ে ওঠে। সালাহউদ্দিন আইয়ুবী জেরুজালেম পুনর্দখলের পর প্রমাণ করেন যে, যুদ্ধ জয় করার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষের প্রতি দয়া ও সুবিচার প্রদর্শন করা।
বিশেষ করে খ্রিস্টান অধিবাসীদের প্রতি তাঁর সদয় আচরণ এবং রক্তপাত এড়ানোর সিদ্ধান্ত ইতিহাসে বিরল। পশ্চিমা ইতিহাসবিদরাও তাঁকে একজন ন্যায়বান ও উদার শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
মধ্যযুগে ধর্মীয় সহাবস্থানের এক উজ্জ্বল উদাহরণ
সালাহউদ্দিনের বিজয় ধর্মীয় সহনশীলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তিনি বিজিত জনপদের জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রেখে একটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এভাবে, ২ অক্টোবর দিনটি শুধু মুসলিম ইতিহাসে নয়, বরং বিশ্ব ইতিহাসেও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে।
আজকের দিনে এই গল্পের গুরুত্ব
আজ, যখন ফিলিস্তিনের যন্ত্রণায় আমাদের অন্তর ভেঙেছে। গাজা রক্তে ভাসছে, মা-বাবারা সন্তানহারা, শিশুদের আর্তনাদ বাতাস ভারী করছে। পানি, খাবার, বিদ্যুৎ, ওষুধ সবই শেষ। নিরাপদ আশ্রয় নেই, সাহায্যের পথ বন্ধ। খুধার জ্বালায় মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ।
তবুও ফিলিস্তিনের বীর যুবকরা লড়ে যাচ্ছে তুফান বেগে জেনো খুজে ফিরছে মহান বীর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবীরকে, বিশ্ববাসীকে বলছে- আমরা একা নই, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন। দীর্ঘ নিপীড়নের পর এই তুফান ইসরাইলের পরাজয়ের নিদর্শন।
আজ সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর মতো নেতাদের ইতিহাস স্মরণ করা অত্যন্ত জরুরি। তাঁর জ্ঞান, সাহস এবং মানবিক আচরণ আমাদের শেখায়, কীভাবে নেতৃত্ব দিতে হয় সম্মান ও সহানুভূতির সঙ্গে।
বিশ্বের অনেক দেশ নীরব, মানবতার সিঁড়ি যেন আজ কোথাও অবশিষ্ট নেই। ফিলিস্তিনের জন্য আমাদের অশ্রু আর দোয়া, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আল্লাহ দোষীদের শাস্তি দিবেন, মজলুমদের মুক্তি দিবেন-ইনশাআল্লাহ।