৭ অক্টোবর, ২০২৫ সালের রাতে ঘটতে চলেছে একটি বিশেষ জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় ঘটনা। সেদিন চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে থাকবে। এই পূর্ণিমার নাম ‘হান্টার্স মুন’ (Hunter’s Moon)। চলুন জেনে নিই এর পেছনের বিজ্ঞান ও ইতিহাস।
সুপারমুন কী?
‘সুপারমুন’ কোনো জ্যোতিষশাস্ত্র নয়, এটি একটি জ্যোতির্বিজ্ঞানভিত্তিক ঘটনা। চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে ডিম্বাকৃতি কক্ষপথে ঘোরে। ফলে এটি কখনো কাছাকাছি (যাকে বলে পেরিগি) এবং কখনো দূরে (অ্যাপোজি) অবস্থানে থাকে।
যখন পূর্ণিমার সময় চাঁদ সবচেয়ে কাছাকাছি আসে, তখন তাকে সুপারমুন বলা হয়। এই সময় চাঁদকে আমরা ১৪% বড় এবং ৩০% বেশি উজ্জ্বল মনে করি।
কেন এর নাম ‘হান্টার্স মুন’?
‘হান্টার্স মুন’ নামটি এসেছে উত্তর আমেরিকার আদিবাসী ও মধ্যযুগীয় ইউরোপীয়দের কাছ থেকে। অক্টোবর মাসে ফসল কাটা শেষ হয়। মাঠ খালি থাকে। এই সময় প্রাণীরা শীতের আগে খাবার সংগ্রহে বের হয়।
এই কারণে শিকারিরা উজ্জ্বল চাঁদের আলোতে সহজে শিকার করতে পারত। তাই এই পূর্ণিমার নাম দেওয়া হয় ‘Hunter’s Moon’।
কখন এবং কীভাবে দেখবেন?
- তারিখ: ৭ অক্টোবর, ২০২৫
- সময়: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যার পর
- সেরা দৃশ্য: চাঁদ ওঠার সময়, যা ‘মুন ইলিউশন’ তৈরি করে। চাঁদকে তখন আরও বড় মনে হয়।
কোথা থেকে দেখবেন?
যেকোনো খোলা জায়গা উপযুক্ত – যেমন ছাদ, মাঠ, বা নদীর পাড়। শহরের আলো থেকে যত দূরে থাকবেন, চাঁদ তত স্পষ্ট দেখাবে।
কী লাগবে?
আপনি খালি চোখেই দেখতে পারবেন। তবে বাইনোকুলার বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করলে চাঁদের খাঁজ স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।
ছবি তুলতে চান? জেনে নিন কিছু টিপস
- ট্রাইপড ব্যবহার করুন: এতে ছবি ঝাপসা হবে না।
- জুম ব্যবহার করুন: চাঁদকে বড় দেখাতে সাহায্য করে।
- ম্যানুয়াল মোড ব্যবহার করুন:
- ISO: 100–200
- Aperture: f/8 – f/11
- Shutter Speed: 1/125s বা এর বেশি
- সাবজেক্ট যোগ করুন: ছবিতে গাছ, ভবন, পাহাড় ইত্যাদি থাকলে তা আরও আকর্ষণীয় হয়।
কিছু ভুল ধারণা
অনেকে মনে করেন, সুপারমুনের সময় ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ে।
তবে, বিজ্ঞানের মতে সুপারমুনের সঙ্গে এসবের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি স্বাভাবিক ও নিরাপদ জ্যোতির্বিজ্ঞান ঘটনা।
উপভোগ করুন এই মহাজাগতিক সৌন্দর্য
৭ অক্টোবর রাতে সময় বের করে আকাশের দিকে তাকান।সুন্দর চাঁদের আলো উপভোগ করুন এবং এই মুহূর্তটি প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করুন।
সুপারমুন, বিশেষ করে ‘হান্টার্স মুন’, এক চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এটি কেবল চোখের আরাম নয়, বরং মহাবিশ্বের সঙ্গে আমাদের সংযোগের এক নিদর্শন।