বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২০, ২০২৫

শিকারের গোপন অস্ত্র: বুমেরাংয়ের অজানা ইতিহাস

বহুল পঠিত

“বুমেরাং” নামটি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের হাতে থাকা বাঁকা কাঠের অস্ত্র। কিন্তু এটি শুধুমাত্র তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং এটি মানব ইতিহাসের অন্যতম প্রাচীন ও বুদ্ধিদীপ্ত অস্ত্র।

এর গঠন যেমন সহজ, কার্যকারিতা ঠিক ততটাই আশ্চর্যজনক।

বুমেরাং কী?

বুমেরাং হলো একটি বিশেষ নকশার বায়ুগতীয় (aerodynamic) অস্ত্র, যা সাধারণত কাঠ দিয়ে তৈরি হয়। এটি মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে:

১. প্রত্যাবর্তনশীল বুমেরাং (Returning Boomerang)

এই ধরনের বুমেরাং সবচেয়ে বেশি পরিচিত। একে সঠিকভাবে নিক্ষেপ করলে এটি আকাশে ঘুরে আবার নিক্ষেপকারীর কাছে ফিরে আসে। এর পেছনে কাজ করে ডানার বক্রতা এবং অপ্রতিসম নকশা। এসব বৈশিষ্ট্য বাতাসের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে “লিফট” এবং “ঘূর্ণন” তৈরি করে।

সাধারণত এই বুমেরাং শিকারের জন্য নয়, বরং খেলাধুলা, অনুশীলন বা মাঝেমধ্যে পাখি শিকারে ব্যবহার হতো।

২. অ-প্রত্যাবর্তনশীল বুমেরাং (Non-returning Boomerang)

এই ধরনের বুমেরাং আকারে বড় ও ভারী হয়। এতে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় বক্রতা কম থাকে। এর মূল কাজ হলো দূরের লক্ষ্যবস্তুতে জোরে আঘাত করা। এই বুমেরাং শিকার করার জন্যই বেশি ব্যবহৃত হতো।

বুমেরাং এর ইতিহাস

অনেকেই মনে করেন বুমেরাং কেবল অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের অস্ত্র। তবে গবেষণায় জানা গেছে, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতায়ও এর ব্যবহার ছিল।

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা হাজার বছর ধরে বুমেরাং ব্যবহার করছেন। তারা এটি শিকার, যুদ্ধ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ব্যবহার করতেন।

প্রাচীন মিশর

তুতেনখামেনের সমাধি থেকে বিভিন্ন নিক্ষেপযোগ্য লাঠি পাওয়া গেছে। এগুলোকে বুমেরাং-এর প্রাচীন রূপ হিসেবে ধরা হয়।

ইউরোপ

পোল্যান্ডে প্রায় ২০,০০০ বছর পুরোনো একটি অ-প্রত্যাবর্তনশীল বুমেরাং আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম বুমেরাংগুলোর মধ্যে অন্যতম।

বুমেরাং-এর প্রত্যাবর্তনের রহস্য

বুমেরাং ফিরে আসে এটি শুধু মজার নয়, এক বৈজ্ঞানিক বিস্ময়ও বটে।

নিক্ষেপের সময় বুমেরাং ঘূর্ণন ও বিশেষ আকারের জন্য বাতাসে একটি “উত্তোলন শক্তি” তৈরি করে। এরপর “জাইরোস্কোপিক প্রিসেশন” নামক এক প্রক্রিয়ায় সেই শক্তি পার্শ্বীয় (sideways) গতিতে রূপান্তরিত হয়।

এই দুই ধরনের শক্তির সংমিশ্রণে বুমেরাং বৃত্তাকার পথে ঘুরে আবার উৎসস্থলে ফিরে আসে।

বুমেরাং শুধু শিকারের অস্ত্র নয়। এটি মানুষের প্রাচীন প্রযুক্তি, বায়ুবিজ্ঞান এবং পদার্থবিদ্যার এক অসাধারণ উদাহরণ।হাজার বছর পার হলেও, আজও এটি অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতির প্রতীক। পাশাপাশি, এটি সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এক কৌতূহলোদ্দীপক বস্তু হিসেবেও পরিচিত।

আরো পড়ুন

বাংলাদেশের সাতটি প্রধান শহরাঞ্চল: অর্থনীতি ও সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু

বাংলাদেশের প্রগতি ও সার্বিক উন্নয়নের গল্প মূলত তার বিভিন্ন শহরাঞ্চলের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো কেবল জনসংখ্যার ঘনত্বের কেন্দ্র নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি, সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং ঐতিহ্যের ধারক। প্রতিটি বড় শহরের রয়েছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব, যা সারা দেশের জন্য অনন্য অবদান রাখে। রাজধানী থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক কেন্দ্র, শিক্ষার আঁতুড়ঘর কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, সবই মিলেমিশে একটি বৈচিত্র্যময় চিত্র তৈরি করেছে। এসব প্রধান নগর কেন্দ্রগুলোর পরিচিতি জানা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ বোঝার জন্য অপরিহার্য।

নদীর পারে চিড়িয়াখানা: মানুষের স্নেহে গড়া পাখির স্বর্গ

নদীর পারে ছোট, শান্ত একটি গ্রাম- হাভাতিয়া। প্রকৃতির নীরবতায় ঘেরা এই গ্রামে আছেন এক ব্যতিক্রম মানুষ, আবুল কাশেম ভূঁইয়া। তার চারপাশ যেন এক জীবন্ত চিড়িয়াখানা। সকালে উঠলেই ঘুঘু, বক, শালিক, এমনকি বেওয়ারিশ বিড়াল-কুকুরও এসে জড়ো হয় তার উঠানে।

দেশের পর্যটনে অবদানের স্বীকৃতি, ১৩ জনকে সম্মাননা পুরস্কার

দেশের পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তিন সাংবাদিকসহ মোট ১৩ জনকে পুরস্কৃত করেছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারে (বিসিএফসিসি) শুরু হওয়া ১৩তম বিমান বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
- Advertisement -spot_img

আরও প্রবন্ধ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ প্রবন্ধ