সৌদি আরবের সঙ্গে সাধারণ কর্মী নিয়োগ নিয়ে একটি ঐতিহাসিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে সোমবার (৬ অক্টোবর), রিয়াদে। বাংলাদেশের শ্রমবাজারের ইতিহাসে যুক্ত হলো এক নতুন অধ্যায়।
বাংলাদেশের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। সৌদি আরবের পক্ষে স্বাক্ষর করেন মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী।
এই চুক্তির গুরুত্ব কী?
এই প্রথমবারের মতো, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সাধারণ কর্মী নিয়োগ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চুক্তি হলো।
এর ফলে অভিবাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা আরও নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুললো
বাংলাদেশ ১৯৭৬ সালে প্রথম সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানো শুরু করে।
তারপর থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি সেখানে কাজ করেছেন।
তবে, এবার চুক্তির মাধ্যমে দক্ষ, আধা-দক্ষ এবং সাধারণ কর্মীরা আরও নিরাপদ ও সুষ্ঠু উপায়ে সৌদি আরবে যেতে পারবেন।
চুক্তির মূল বিষয়গুলো
এই চুক্তির আওতায় থাকছে:
- প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা যাচাইয়ে গুরুত্ব
- ডিজিটাল নিয়োগ যাচাইকরণ
- যৌথ অনলাইন ডেটা প্ল্যাটফর্ম
- নারী কর্মীদের সুরক্ষা
- দালাল চক্র দমনে যৌথ মনিটরিং
- আকামা নবায়ন ও এক্সিট ভিসা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা
রেমিট্যান্স ও সম্পর্ক – উভয়ই বাড়বে
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মতে, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে আগামী দুই বছরে সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা কমপক্ষে ২০% বাড়বে।
বর্তমানে সেখানে প্রায় ২৭ লাখ কর্মী রয়েছেন। তাঁরা প্রতিবছর প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন।
পাশাপাশি, বাংলাদেশি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, ও উচ্চ মানের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে।
বাংলাদেশের জন্য এক যুগান্তকারী সাফল্য
সরকার ও বিশেষজ্ঞরা এই চুক্তিকে “এক যুগান্তকারী সাফল্য” হিসেবে দেখছেন।
এর ফলে শুধু রেমিট্যান্স বাড়বে না, বরং আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উন্নত হবে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন:
“দক্ষ কর্মী রপ্তানি শুধু বৈদেশিক আয়ের উৎস নয়, এটি দেশের সম্মানও। এই চুক্তি আমাদের সেই পথ আরও সুদৃঢ় করবে।”
এই চুক্তির মাধ্যমে:
- শ্রমিকরা নিরাপদে বিদেশ যেতে পারবেন,
- প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন ঘটবে, এবং
- বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।




