মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ রহস্য
মহাবিশ্ব প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং সেই সম্প্রসারণের গতি ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ১৯৯৮ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ কেবল অব্যাহত নয়, বরং এটি ত্বরান্বিত হচ্ছে। এটাই বিজ্ঞানীদের সামনে এক বিরাট প্রশ্ন তুলে ধরে: কেন এই সম্প্রসারণ এত দ্রুত হচ্ছে? খুজুন মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ রহস্য ।
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বিজ্ঞানীরা ধারণা দিয়েছেন একটি অজানা শক্তির- যাকে বলা হয় “অন্ধকার শক্তি” (Dark Energy)। কিন্তু আজও এর বাস্তব অস্তিত্বের প্রমাণ মেলেনি।
নতুন জ্যামিতিক তত্ত্ব: ফিনসলার গ্র্যাভিটি
এই রহস্যের জবাব খুঁজতে বিজ্ঞানীরা এবার নতুন একটি পথে হাঁটছেন। জার্মানি ও রোমানিয়ার গবেষকেরা একটি নতুন জ্যামিতিক মডেল প্রস্তাব করেছেন- যার নাম ফিনসলার গ্র্যাভিটি (Finsler Gravity)।
এই মডেলটি আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের একটি সম্প্রসারিত রূপ। এটি মহাবিশ্বের গঠনকে ব্যাখ্যা করে এক ভিন্ন উপায়ে, যেখানে অন্ধকার শক্তির প্রয়োজনীয়তা আর নেই।
ফিনসলার গ্র্যাভিটি কীভাবে কাজ করে
ফিনসলার তত্ত্বে, স্থান ও সময়ের জ্যামিতিক গঠন একটু ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। এই মডেল অনুযায়ী:
- মহাকর্ষীয় বল আরও গভীরভাবে বোঝা যায়
- বৃহৎ স্কেলে মহাবিশ্বের গতিবিধি বিশ্লেষণ করা সম্ভব
- ত্বরান্বিত সম্প্রসারণকে ব্যাখ্যা করা যায় জ্যামিতিক কাঠামোর মাধ্যমেই
ফলে, অন্ধকার শক্তির প্রয়োজন না পড়েও মহাবিশ্বের বর্তমান আচরণ ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়।
ভবিষ্যতের দিগন্ত: বিজ্ঞান ও সম্ভাবনা
এই তত্ত্ব এখনো প্রাথমিক গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে, কিন্তু বিজ্ঞানী ক্রিশ্চিয়ান ফাইফার এই আবিষ্কারকে “যুগান্তকারী” বলে অভিহিত করেছেন।
এই গবেষণার মাধ্যমে:
- আমরা মহাবিশ্বের জন্ম ও বিবর্তনের পেছনের কারণগুলো আরও পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারব
- আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে
- “অন্ধকার শক্তি” নিয়ে প্রচলিত ধোঁয়াশা অনেকটাই দূর হতে পারে
রহস্যের মাঝেই আশার আলো
যদিও মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ আজও এক রহস্য, কিন্তু ফিনসলার গ্র্যাভিটি নামক নতুন তত্ত্ব একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে। অজানা শক্তির উপর নির্ভর না করেও যদি আমরা মহাবিশ্বকে বুঝতে পারি- তবে এ এক সত্যিকারের বৈজ্ঞানিক বিপ্লব।




