দেশে একটি নির্বিঘ্ন, উৎসবমুখর, জনগণনির্ভর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোচ্চ দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সেনাকুঞ্জে আয়োজিত বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ এই নির্দেশনা দেন।
গণতান্ত্রিক উত্তরণে নির্বাচন একটি নতুন অধ্যায়
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“বাংলাদেশের গণতন্ত্রের যাত্রায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচন একটি নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনীকে দৃঢ় দায়িত্বশীলতার সাথে ভূমিকা রাখতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন যে, জনগণের আস্থা, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর নিষ্ঠা ও পেশাগত সক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা
তার বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও বীর যোদ্ধাদের প্রতি অনন্য শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পাশাপাশি তিনি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ, আহত ও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা সাধারণ জনগণের স্মৃতিকে গভীরভাবে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন,
“বাংলাদেশ একটি ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে এগিয়েছে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে জাতি বারবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।”
বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক সহাবস্থান- তবুও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর প্রস্তুতি
প্রধান উপদেষ্টা পুনর্ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় ও মধ্যপন্থী রাষ্ট্র, যা সব বন্ধুদেশের সাথে মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
তবে একইসাথে তিনি সতর্ক করে বলেন-
“যেকোনো বহিঃশত্রুর আগ্রাসন বা অনভিপ্রেত হামলা থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।”
আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা
সমসাময়িক বিশ্বে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী রাখতে সরকার তিন বাহিনীর আধুনিকায়নে গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি জানান-
- সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কাঠামো শক্তিশালী করা হচ্ছে
- বিশ্বমানের উন্নত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাড়ানো হচ্ছে
- অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, স্মার্ট নজরদারি ব্যবস্থা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা সামগ্রী সংযোজিত হচ্ছে
- প্রতিরক্ষা খাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও সক্রিয়ভাবে বাড়ানো হচ্ছে
নির্বিঘ্ন নির্বাচনের জন্য সামগ্রিক প্রস্তুতি জোরদার
প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বাস প্রকাশ করেন-
সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠা দেশের জনগণকে একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ উপহার দেবে।
তিনি আরও বলেন,
“যে কোনো পরিস্থিতিতে শান্তি রক্ষা, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং গণতান্ত্রিক চর্চা শক্তিশালী করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”




