বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২০, ২০২৫

দুই দশক পর নবযাত্রা: বাংলাদেশ-পাকিস্তান কূটনৈতিক সফলতা

বহুল পঠিত

প্রায় বিশ বছর পর ২৭/১০/২৫ (সোমবার) পুনরায় বসেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) বৈঠক। ঢাকার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক শুধু দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করেনি, বরং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন দ্বারও খুলে দিয়েছে।

বৈঠকে উভয় দেশই কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, জ্বালানি, এবং পরিবহন খাতে সহযোগিতা বাড়াতে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

পারস্পরিক উন্নয়নের অঙ্গীকার

বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বৈঠকে বলেন, “এই সভা শুধু সম্পর্ক উন্নয়নের নয়, বরং জনগণের কল্যাণেরও সুযোগ তৈরি করবে। কৃষি, বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে নেওয়া পদক্ষেপগুলো সরাসরি দুই দেশের মানুষের উপকারে আসবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যদি পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করে, তাহলে পুরো অঞ্চলের উন্নয়ন গতি পাবে।

গবেষণা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে নতুন দিগন্ত

দুই দেশের প্রতিনিধি দল যৌথ গবেষণা, শিক্ষা বিনিময়, ও প্রযুক্তি উন্নয়নের বিষয়ে একমত হয়েছে।
তারা একাধিক সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের আগ্রহও প্রকাশ করেছে, যাতে সহযোগিতা দীর্ঘমেয়াদি ও ফলপ্রসূ হয়।

বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও নতুন সুযোগ

পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী আলী পারভেজ মালিক বলেন “বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্য এক বিলিয়ন ডলারেরও কম। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনেক বড়। আমরা চাই, কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যালস ও শিল্পপণ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য আরও বাড়াতে।”

তিনি আরও জানান, কৃষি ও জ্বালানি খাতে নতুন সহযোগিতা ক্ষেত্রও অনুসন্ধান করা হবে।

আঞ্চলিক সহযোগিতার সম্ভাবনা

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই বৈঠক কেবল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়- বরং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা-এর সঙ্গে সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনাও সৃষ্টি করবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তি বিনিময় আরও শক্তিশালী হবে।

ইতিবাচক ফলাফলের আশা

দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটি উভয় পক্ষের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
উভয় দেশই জানিয়েছে, তারা এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রেখে বাস্তব অগ্রগতি অর্জনে কাজ করবে।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয়ের লক্ষ্য- সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং জনগণের জীবনমান উন্নত করা।

দক্ষিণ এশিয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে

বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের নবম বৈঠক কেবল কূটনৈতিক আয়োজন নয়; এটি একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রতীক
বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও জ্বালানি সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশ একসঙ্গে এগিয়ে গেলে দক্ষিণ এশিয়া আরও সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীল অঞ্চলে পরিণত হবে।

আরো পড়ুন

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে পর্যটন ও বাণিজ্যের সম্ভাবনা: নতুন উন্নয়ন ও সহযোগিতা

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে পর্যটন ও বাণিজ্য সম্ভাবনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম ও ওল্ডহ্যাম শহরের মেয়র কাউন্সিলর এডি মুরের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে পর্যটন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন, যা দুই দেশের জনগণের জন্য ইতিবাচক সুযোগ তৈরি করবে।

একনেক অনুমোদন করলো ১২টি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্প, ব্যয় ৭,১৫০ কোটি টাকা

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭,১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।

রেমিট্যান্স ও রপ্তানি প্রবাহে স্থিতিশীলতা, রিজার্ভ এখনো মজবুত অবস্থানে

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু)–এর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের আমদানি বিল পরিশোধের পরও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে। গত রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক আকুর কাছে ১.৬১ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অর্থ পরিশোধ করেছে, যা সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আমদানি-রপ্তানির স্বাভাবিক নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার অংশ।
- Advertisement -spot_img

আরও প্রবন্ধ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ প্রবন্ধ