এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাদ পড়লেও বাংলাদেশ বনাম ভারত ফুটবল ম্যাচ–এর উত্তাপ কোনোভাবেই কমেনি। দুই প্রতিবেশী দেশের ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সব সময়ই ভক্তদের মাঝে বাড়তি আবেগ তৈরি করে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। ম্যাচের আগের দিন দুই দলই করেছে ক্লোজডোর অনুশীলন, বাড়িয়ে তুলেছে রহস্য এবং কৌশলগত প্রস্তুতির গুরুত্ব।
১৮ নভেম্বর মঙ্গলবার জাতীয় স্টেডিয়ামে হতে যাওয়া এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের ভারত ম্যাচ নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের জনগণের মধ্যে কৌতুহল এখন তুঙ্গে।
ক্লোজডোর অনুশীলনে গোপনীয়তা-কেন এত সতর্ক ভারত ও বাংলাদেশ?
রোববার পুরো অনুশীলন ঘিরে ভারতীয় দলের জন্য ছিল কঠোর নিরাপত্তা। কোনো মিডিয়া ছিল না, কোনো ছবি–ভিডিও নেওয়া যায়নি।
এমনকি খালিদ জামিলের নেতৃত্বাধীন ভারতও ম্যাচের আগের সব প্রস্তুতি গোপনে সারছে।
বাংলাদেশের পক্ষেও একই সতর্কতা-
১৩ নভেম্বর ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ (ভারত জিতেছিল ৬-১) হয়েছিল সম্পূর্ণ ক্লোজডোরে।
এরপর থেকেই ম্যাচ প্রস্তুতিতে রহস্য বজায় রেখেছে দুই শিবিরই।
২২ বছরের জয়খরা কাটাতে মুখিয়ে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ২১ বছর ধরে ভারতের বিপক্ষে জিততে পারেনি।
কিন্তু এবার দলটির আত্মবিশ্বাস চোখে পড়ার মতো।
এবারের দলের বিশেষ শক্তি-
- হামজা চৌধুরী
- শমিত সোম
- কিউবা
- তারিক কর্মকার
- জায়ান
- জামাল ভুঁইয়া
প্রবাসী এই ফুটবলারদের উপস্থিতি বাংলাদেশ দলে এনে দিয়েছে নতুন গতি, শক্তি ও টেকনিক্যাল সুবিধা।
তাই এবার লাল-সবুজ শিবিরে এশিয়ান কাপে প্রথম জয়ের স্বপ্ন আরও জোরালো।
হামজা চৌধুরী vs রায়ান উইলিয়ামস: ম্যাচের ভেতরে আরেক ‘মিনি-ডুয়েল’
অনেকের মতে ম্যাচের সবচেয়ে আকর্ষণীয় লড়াই হতে পারে-
হামজা চৌধুরী বনাম অস্ট্রেলীয় প্রবাসী রায়ান উইলিয়ামস।
তবে শর্ত একটাই- রায়ান উইলিয়ামস খেলতে পারবেন শুধুমাত্র যদি AIFF অস্ট্রেলিয়া থেকে অনাপত্তিপত্র (NOC) পায়।
মধ্যমাঠে দুর্দান্ত খেলছেন হামজা; রায়ান খেললে তাঁকে থামানোর দায়িত্বও থাকবে তাঁর কাঁধে।
গ্যালারি সেলআউট- ৬ মিনিটে টিকিট শেষ!
সাধারণ গ্যালারির টিকিট মাত্র ৬ মিনিটে বিক্রি শেষ-যা প্রমাণ করে ম্যাচটি ভক্তদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচ যতবার হয়, ততবারই গ্যালারিতে উত্তেজনার ঢেউ দেখা যায়।
এবারও কোনো ভিন্নতা নেই।
ভারতের প্রস্তুতি-অভিজ্ঞদের শেষ লড়াই?
ভারতীয় কোচ খালিদ জামিল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তারুণ্যকেন্দ্রিক দল গড়েছেন।
বাদ দিয়েছেন সুনিল ছেত্রী (বয়স–পারফরম্যান্স বিবেচনায়)।
একাদশে থাকতে পারেন তরুণরা।
গুরপ্রিত সিংহ, সন্দেশ জিংগান ও রাহুল বেকেলের জন্য এটি হতে পারে শেষ ম্যাচ।
ভারতের গোলরক্ষক গুরপ্রিত সিংহ বলেন-
“প্রতিযোগিতা যা-ই হোক, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের উত্তাপ কখনও কমে না।”
তাঁর কথাতেই বোঝা যায়, ম্যাচটি দুই দলের কাছেই এক বড় মানসিক চ্যালেঞ্জ।
আগস্টের স্মৃতি, বর্তমানের বাস্তবতা
ভারত সর্বশেষ বাংলাদেশে খেলেছিল ২০১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে।
সেই দলে ছিলেন- লালিয়ানজুয়ালা চ্যাংগতে
বর্তমান দলের একমাত্র ফুটবলার যিনি ঢাকায় আগে খেলেছেন।
এবার নতুন খেলোয়াড়, নতুন কোচ, নতুন কৌশল-সব মিলিয়ে ম্যাচটি হয়ে উঠেছে আরও আকর্ষণীয়।
উত্তাপ, গোপনীয়তা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা- দারুণ লড়াইয়ের অপেক্ষা
বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচ সবসময়ই আবেগ, সম্মান আর লড়াইয়ের প্রতীক।
দুই দলের গোপন প্রস্তুতি, তারুণ্য নির্ভর স্কোয়াড, গ্যালারির উন্মাদনা-সব মিলিয়ে ম্যাচটি হতে যাচ্ছে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের সবচেয়ে আলোচিত লড়াই।
এখন অপেক্ষা শুধু মাঠের ৯০ মিনিটের।
যেখানে লড়াই হবে ছন্দ, কৌশল ও মনোবল দিয়ে।




