রবিবার, অক্টোবর ৫, ২০২৫

প্রযুক্তি আর সমাজ বদলের স্বপ্ন: জাতিসংঘে ড. ইউনূসের শক্তিশালী বার্তা

বহুল পঠিত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিতে বর্তমানে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, তিনি জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের সাইড ইভেন্ট ‘Social Business, Youth and Technology’-তে বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং তরুণ ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনের উপর জোর দেন।

ড. ইউনূসের বক্তব্যটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

উন্নয়ন সহায়তা কমালে বিপর্যয় বাড়বে: ড. ইউনূসের সতর্কবার্তা

ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একাধিক বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলা করে এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া,
  • জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা,
  • এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে টিকে থাকার লড়াই।

তিনি বলেন, “এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমানো হলে তা হবে বিপর্যয় ডেকে আনার সামিল। বরং দরকার উন্নয়ন সহযোগিতা আরও বাড়ানো।”

সাহসিকতায় গড়ে উঠবে ভবিষ্যৎ

ড. ইউনূস আরও বলেন:“একটি উন্নত পৃথিবী তৈরি হবে আজকের সাহসিকতা, অঙ্গীকার ও কাজের মাধ্যমে- অতীতের ব্যর্থতা দিয়ে নয়।”

তিনি বিশেষভাবে কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন:

  • সোশ্যাল বিজনেস মডেল-এর প্রসার
  • বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও কূটনীতি গড়ে তোলা
  • টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি

রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্ব: আন্তর্জাতিক বার্তা বহন

ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে এবার বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৬ জন শীর্ষস্থানীয় নেতা গেছেন, যা জাতীয় ঐক্যের একটি প্রতীকী প্রকাশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন:

  • মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি
  • হুমায়ুন কবির, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, বিএনপি
  • সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, নায়েবে আমীর, জামায়াতে ইসলামি
  • আখতার হোসেন ও ডা. তাসনিম জারা, জাতীয় নাগরিক পার্টি
  • নকিবুর রহমান তারেক, জামায়াত নেতা (যুক্তরাষ্ট্র থেকে)

এই বহুদলীয় অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক অবস্থান ও ঐক্য প্রতিষ্ঠার একটি কৌশলগত প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশের উত্তরণের পথে বৈশ্বিক বার্তা

বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে উত্তরণে প্রস্তুত, তবে দেশের ভেতরে রাজনৈতিক সংকট, রোহিঙ্গা ইস্যু এবং জলবায়ু ধাক্কা এই পথকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলছে।

জাতিসংঘের এই অধিবেশন এবং ড. ইউনূসের অংশগ্রহণকে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন একটি কৌশলগত কূটনৈতিক উদ্যোগ হিসেবে, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বমঞ্চে নতুন কণ্ঠ

ড. ইউনূসের বক্তব্য শুধু একটি উন্নয়ন বার্তা নয়, এটি একটি নৈতিক ও রাজনৈতিক বার্তা-যেখানে ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব তরুণদের কাঁধে, প্রযুক্তির শক্তিকে ব্যবহার করে।

যেখানে অনেক দেশ ভেঙে পড়ছে, সেখানে বাংলাদেশ বৈচিত্র্য ও সংকটকে পুঁজি করে এগিয়ে যেতে চাইছে সম্মিলিতভাবে।

“তরুণেরা শুধু ভবিষ্যতের আশাবাদ নয়, তারাই ভবিষ্যৎ গড়ার হাতিয়ার।” – ড. ইউনূস

আরো পড়ুন

উইকিমিডিয়া এআই ডেটা ব্যবহার: ছোট ডেভেলপারদের জন্য বড় সম্ভাবনা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (AI)-এর জগতে ডেটা হলো জ্বালানি। কিন্তু বড় কর্পোরেশন ছাড়া এই ডেটা সংগ্রহ করা সাধারণ ডেভেলপারদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

৩ অক্টোবরের ঐতিহাসিক মুহূর্ত: স্বাধীনতা দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি

৩ অক্টোবরের ঐতিহাসিক মুহূর্ত ইতিহাসের পাতায় জেগে ওঠে বহু ঘটনার স্মৃতি।একেক বছর এই তারিখে রচিত হয়েছে রাষ্ট্রের ভাগ্য, আর মানুষ পেয়েছে নতুন কিছু উপলব্ধির...

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শারদীয় দুর্গোৎসবে শুভেচ্ছা বিনিময় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের

শারদীয় দুর্গোৎসব ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হিন্দু ধর্মাবলম্বী নাগরিকরা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
- Advertisement -spot_img

আরও প্রবন্ধ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ প্রবন্ধ

error: Content is protected !!