তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান কুয়েত সফরে বলেছেন, গাজায় স্থায়ী শান্তি বজায় রাখতে যুদ্ধবিরতি রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় তিনি মুসলিম বিশ্বকে গাজা যুদ্ধবিরতিতে শান্তির আহ্বান ও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
এই সফরে তিনি কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল আহমেদ আল জাবের আল সাবাহ–এর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন এবং মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সংকট, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা করেন।
যুদ্ধবিরতির গুরুত্ব ও গাজায় শান্তির বার্তা
গাজায় ইসরাইল-হামাস সংঘর্ষের পর সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, তা টিকিয়ে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এরদোয়ান বলেন, “গাজায় যে যুদ্ধবিরতি অর্জিত হয়েছে, তা রক্ষা করা কেবল কূটনৈতিক নয়, মানবিক দায়িত্ব।”
তিনি বিশ্বাস করেন, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানই একমাত্র পথ, যাতে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন উভয়ের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত হয়।
মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের আহ্বান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, “শুধু সমালোচনা নয়, এখন দরকার কার্যকর উদ্যোগ। মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের কণ্ঠস্বর এক হতে হবে।”
কুয়েত-তুরস্ক সম্পর্ক নতুন মাত্রায়
এ সফরে দুই দেশের মধ্যে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
- জ্বালানি খাতে সহযোগিতা
- সমুদ্রপরিবহন ও প্রতিরক্ষা শিল্পে অংশীদারিত্ব
- সরাসরি বিনিয়োগ সম্প্রসারণ
- মারিটাইম সার্টিফিকেট স্বীকৃতি চুক্তি
এরদোয়ান কুয়েতের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের সভাপতি হিসেবে কুয়েত আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
সিরিয়া ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা
এরদোয়ান সিরিয়ার রাজনৈতিক ঐক্য ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে তুরস্কের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। “তুরস্কের লক্ষ্য সবসময়ই অঞ্চলটিতে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা,” বলেন তিনি।
রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের এই সফর একদিকে যেমন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মজবুত করেছে, তেমনি গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করেছে। যুদ্ধবিরতি যেন টিকে থাকে এবং ফিলিস্তিনি জনগণ যেন সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারে এটাই ছিল তাঁর বার্তার মূল মর্ম।
সূত্র: TRT World, Anadolu Agency, AP News




