১. স্মার্ট খাদ্যতালিকা: রক্তে শর্করার ভারসাম্য
সুস্থ থাকার জন্য স্মার্ট খাদ্যাভ্যাস অপরিহার্য। প্রতিদিনের পাতে রাখুন পুষ্টিকর খাবার। আঁশযুক্ত খাবার যেমন শস্যদানা, ডাল ও শাকসবজি খান। এগুলো শর্করা শোষণ ধীর করে। প্রক্রিয়াজাত খাবার ও মিষ্টি এড়িয়ে চলুন। খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। ছোট প্লেটে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। তরুণরা বাইরের খাবার কমাক। বয়স্করা সহজে হজম হয় এমন খাবার বেছে নিন। পরিমিত পরিমাণে ফল খেতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন বাদাম ও অলিভ অয়েল গ্রহণ করুন। পানি পর্যাপ্ত পান করুন সারাদিন। একটি পরিকল্পিত ডায়েট চার্ট অনুসরণ করলে ফল দ্রুত পাবেন।
২. শরীরচর্চার ক্ষমতা: বয়সভেদে করণীয়
নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ সুস্থতার মূলমন্ত্র। এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়। বয়স্করা প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন। ধীর গতির হাঁটা শরীরের জন্য উপকারী। তরুণরা অবশ্য সাঁতার, সাইকেল চালানো বা জিম করতে পারে। নিয়মিততা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কাজই না করা থেকে ভালো। যোগব্যায়াম সব বয়সের জন্য উপযোগী। এটি মানসিক শান্তিও দেয়। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ব্যায়াম। শুরুতে হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন। ধীরে ধীরে সময় ও তীব্রতা বাড়ান। বন্ধুদের সাথে ব্যায়াম করলে মজা পাবেন। শরীরকে সক্রিয় রাখুন সারাক্ষণ।
৩. নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও চিকিৎসা: নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি
রক্তে শর্করার মাত্রা জানা অত্যন্ত জরুরি। গ্লুকোমিটার দিয়ে নিয়মিত পরীক্ষা করুন। এতে অবস্থার উন্নতি-অবনতি বোঝা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন। ওষুধ খাওয়ার সময় মেনে চলুন। কখনোই নিজের ইচ্ছামতো ওষুধ পরিবর্তন করবেন না। নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডাক্তার দেখান। শরীরের অন্যান্য পরীক্ষাও করাতে হবে। যেমন কিডনি, চোখ ও হৃদপিণ্ডের পরীক্ষা। তরুণদের ইনসুলিন নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। বয়স্কদের ওষুধের ডোজ কম-বেশি হতে পারে। সব রিপোর্ট একটি খাতায় লিখে রাখুন। এটি চিকিৎসকের জন্য সহায়ক হবে।
৪. মানসিক চাপ মুক্তি: সুস্থ মনের প্রভাব
মানসিক চাপ রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই মনের যত্ন নেওয়া আবশ্যক। প্রতিদিন কিছুক্ষণ ধ্যান করুন। এটি মনকে শান্ত রাখে। নিজের পছন্দের কাজে সময় দিন। যেমন গান শোনা, বই পড়া বা বাগান করা। পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটান। সামাজিক যোগাযোগ একাকীত্ব দূর করে। পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন সবার। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ভালো ঘুম শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকুন। সবসময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করুন। একটি সুস্থ মন শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৫. জীবনযাপন পরিবর্তন ও পরিবারের সহযোগিতা
সুস্থ জীবনযাপনের জন্য কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। ধূমপান ও তামাক জাতীয় দ্রব্য একেবারে ত্যাগ করুন। এগুলো জটিলতা বাড়ায়। পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা রোগীকে উৎসাহ দিবে। সবাই মিলে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারে। এতে রোগী একা মনে হয় না। বাড়ির অন্যদেরও সচেতন হওয়া উচিত। তরুণরা বয়স্কদের খোঁজখবর নিতে পারে। বয়স্করা তরুণদের অভিজ্ঞতা দিতে পারেন। একসাথে হাঁটা বা ব্যায়াম করা যেতে পারে। সামাজিক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসচেতন খাবার বেছে নিন। নিজের যত্ন নেওয়া কোনো আত্মকেন্দ্রিকতা নয়। এটি পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধের প্রকাশ।




