কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ক্রিকেটপ্রেমীরা দেখল এক অবিশ্বাস্য নাটকীয় দিনের জন্ম। মাত্র ৪৭ রান দরকার ছিল ভারতের, আর হাতে ছিল ৩ উইকেট। কিন্তু স্কোরকার্ডে দেখা গেল, শুবমান গিল চোট পেয়ে হাসপাতালে-মানে কার্যত ভারতের হাতে ছিল মাত্র ২ উইকেট।
অক্ষর প্যাটেল ও যশপ্রীত বুমরার জুটির ভরসায় তখনও স্বপ্ন দেখছিল ভারত। পুরো গ্যালারিই তাকিয়ে ছিল সেই জুটির দিকে।
বাভুমার সাহসী সিদ্ধান্তে বদলে যায় ম্যাচের চিত্র
এমন উত্তেজনার মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা নিলেন চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত—বাঁহাতি ব্যাটার অক্ষরের সামনে আনলেন বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজকে। ধারাভাষ্যকারদের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল বিতর্ক- “বাঁহাতির সামনে বাঁহাতি বোলার কেন?”
মহারাজের প্রথম চার বলেই অক্ষর হাঁকালেন দুই ছক্কা ও এক চার। ভারতীয় ড্রেসিংরুমে জ্বলে উঠল নতুন আশা। কিন্তু সেই ঝড় বেশিক্ষণ টিকল না।
পঞ্চম বলেই আরেকটি ছক্কা মারতে গিয়ে অক্ষর ১৭ বলে ২৬ রানে বাভুমার হাতে ক্যাচ তুলে দেন।
পরের বলেই মহারাজের টার্নে ধরা পড়েন মোহাম্মদ সিরাজ।
মাত্র দুই বলে ভারত হারাল শেষ ভরসা দুই ব্যাটারকে- আর ম্যাচও চলে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে।
শেষ পর্যন্ত ভারত গুটিয়ে যায় মাত্র ৯৩ রানে।
প্রথম ইনিংসের লিডও বাঁচাতে পারল না ভারত
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয় ১৫৯ রানে।
জবাবে ভারত তোলে ১৮৯ রান- পায় ৩০ রানের লিড।
কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে টেম্বা বাভুমার অনবদ্য ৫৫ রানের লড়াকু ইনিংস ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকা তোলে ১৫৩।
ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৪ রান।
কিন্তু নিজেদের চেনা কন্ডিশনে হার্মান-মহারাজদের স্পিনে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে ভারতীয় ব্যাটিং।
তাড়া করতে গিয়ে একশ রানও করতে পারল না স্বাগতিকরা।
ভারতের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় জয়গুলোর একটি
এমন কম স্কোরে তাড়ায় হার ভারতের মাঠে খুব কমই দেখা গেছে। এর আগে ২০০৪ সালে মুম্বাই টেস্টে ১০৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারত ৯৩ রানে অলআউট হয়েছিল।
এই জয়ে শেষ হলো ১৫ বছরের অপেক্ষা– ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারির পর এবার প্রথমবার ভারতের মাঠে টেস্ট জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা।
সিরিজে ১–০ তে এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা।




