সূরা হাশর কুরআনের এমন একটি সূরা যা ইসলামী সমাজের ঐক্য, সতর্কতা ও আল্লাহর উপর সম্পূর্ণ ভরসা স্থাপনের শিক্ষা দেয়। বিশেষ করে সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত (২২–২৪) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তায়ালার ১৪টি মহিমান্বিত নাম বর্ণিত হয়েছে।
সূরা হাশরের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
সূরার নাম, অর্থ ও নাজিল হওয়ার স্থান
“হাশর” শব্দের অর্থ সমাবেশ বা একত্রিত হওয়া। সূরাটি মদীনায় নাজিল হয়েছে। এতে রয়েছে মোট ২৪টি আয়াত ও ৩টি রুকু।
সূরার মূল বার্তা
সূরায় মুসলিম সমাজের ঐক্য, তাকওয়া, মুনাফিকদের সতর্কবার্তা এবং আল্লাহর ক্ষমতা সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। শেষ তিন আয়াত আল্লাহর সর্বশক্তিমত্তা ও গুণাবলী স্মরণ করিয়ে দেয়।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত আরবি, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
আরবি
- هُوَ اللّٰهُ الَّذِیۡ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۚ عٰلِمُ الۡغَیۡبِ وَ الشَّهَادَۃِ ۚ هُوَ الرَّحۡمٰنُ الرَّحِیۡمُ ﴿۲۲
- هُوَ اللّٰهُ الَّذِیۡ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۚ اَلۡمَلِكُ الۡقُدُّوۡسُ السَّلٰمُ الۡمُؤۡمِنُ الۡمُهَیۡمِنُ الۡعَزِیۡزُ الۡجَبَّارُ الۡمُتَكَبِّرُ ؕ سُبۡحٰنَ اللّٰهِ عَمَّا یُشۡرِكُوۡنَ ﴿۲۳
- هُوَ اللّٰهُ الۡخَالِقُ الۡبَارِئُ الۡمُصَوِّرُ لَهُ الۡاَسۡمَآءُ الۡحُسۡنٰی ؕ یُسَبِّحُ لَهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ وَ هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَكِیۡمُ ﴿۲۴
বাংলা উচ্চারণ
২২. হুয়াল্লাহুল্লাযি লা ইলা-হা ইল্লা হু, ‘আলিমুল গাইবি ওয়াশ্ শাহাদাহ, হুয়ার রাহমানুর রাহিম।
২৩. হুয়াল্লাহুল্লাযি লা ইলা-হা ইল্লা হু, আল-মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মুমিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। সুবহানাল্লাহি ‘আম্মা ইউশরিকূন।
২৪. হুয়াল্লাহুল খালিকুল বারিয়ুল মুসাওয়ির, লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউসাব্বিহু লাহু মা ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম।
বাংলা অর্থ
২২. তিনিই আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই, তিনি গায়েব ও উপস্থিত বিষয়াদির জ্ঞানী; তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু।
২৩. তিনিই আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই। তিনিই অধিপতি, মহাপবিত্র(১), শান্তি-ত্রুটিমুক্ত, নিরাপত্তা বিধায়ক, রক্ষক পরাক্রমশালী, প্রবল, অতীব মহিমান্বিত। তারা যা শরীক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র, মহান।
২৪. তিনিই আল্লাহ সৃজনকর্তা, উদ্ভাবন কর্তা, রূপদাতা, তাঁরই সকল উত্তম নাম।(১) আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে, সবকিছুই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরীক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
আয়াতের বাংলা ব্যাখ্যা
২১ নং আয়াতের ব্যাখ্যা-
(১) অর্থাৎ সৃষ্টির কাছে যা গোপন ও অজানা তিনি তাও জানেন আর যা তাদের কাছে প্রকাশ্য ও জানা তাও তিনি জানেন। এই বিশ্ব-জাহানের কোন বস্তুই তার জ্ঞানের বাইরে নয়। [ইবন কাসীর বাগভী]
(২) অর্থাৎ তিনি রহমান ও রহীম বা দাতা ও পরম দয়ালু। একমাত্র তিনিই এমন এক সত্তা যার রহমত অসীম ও অফুরন্ত। সমগ্র বিশ্ব চরাচরব্যাপী পরিব্যাপ্ত এবং বিশ্ব-জাহানের প্রতিটি জিনিসই তাঁর বদান্যতা ও অনুগ্রহ লাভ করে থাকে। [ইবন কাসীর]
২২ নং আয়াতের ব্যাখ্যা-
মূল ইবারতে الْقُدُّوسُ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যা আধিক্য বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। এর মূল ধাতু قدس। এর অর্থ সবরকম মন্দ বৈশিষ্ট মুক্ত ও পবিত্র হওয়া। [ইবন কাসীর; কুরতুবী]
২৪ নং আয়াতের ব্যাখ্যা-
অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলার উত্তম উত্তম নাম আছে। হাদীসে বলা হয়েছে, “আল্লাহর এমন নিরানব্বইটি নাম রয়েছে যে কেউ এগুলোর (সঠিকভাবে) সংরক্ষণ করবে (হক আদায় করবে) সে জান্নাতে যাবে”। [বুখারী: ২৭৩৬, মুসলিম: ২৬৭৭]
শেষ তিন আয়াতের গুরুত্ব
মহান আল্লাহ্ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত এ একসঙ্গে তাঁর ১৪ টি নাম বা গুনাবলির কথা উল্লেখ করেছেন যা পবিত্র কুরআনের আর কোন জায়গায় একসঙ্গে এতগুলো নাম বা গুণাবলী উল্লেখ করেননি। সুতরাং এ থেকেই বুঝা যায় এই তিন আয়াতের গুরত্ব অপরিসীম। এছারও সূরা এই তিন আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণনা এসেছে।
শেষ তিন আয়াতে উল্লেখিত নামসমূহ (১৪টি)
- আল্লাহ (Allah) – একমাত্র সত্যিকারের উপাস্য।
- আল-মালিক (Al-Malik) – রাজাধিরাজ, সবকিছুর মালিক।
- আল-কুদ্দুস (Al-Quddus) – পরম পবিত্র, দোষমুক্ত।
- আস-সালাম (As-Salam) – শান্তি ও নিরাপত্তার উৎস।
- আল-মুমিন (Al-Mu’min) – নিরাপত্তা প্রদাতা, বিশ্বাসী।
- আল-মুহাইমিন (Al-Muhaymin) – সর্বত্র নজরদারি ও রক্ষা করা।
- আল-আজিজ (Al-Aziz) – পরাক্রমশালী, শক্তিশালী।
- আল-জাব্বার (Al-Jabbar) – অনুগত ও বলবান।
- আল-মুতাকাব্বির (Al-Mutakabbir) – মহিমাশালী, গৌরবময়।
- আল-খালিক (Al-Khaliq) – সৃষ্টিকর্তা।
- আল-বার (Al-Bari’) – নিখুঁত সৃষ্টিকর্তা, পরিকল্পনাকারী।
- আল-মুসাওয়ার (Al-Musawwir) – রূপ ও বৈশিষ্ট্য প্রদানকারী।
- আল-রাহিম (Al-Rahim) – অসীম দাতা, সীমাহীন করুণাময়।
- আল-রাহমান (Ar-Rahman) – পরম দয়ালু।
প্রতিটি নাম আল্লাহর একেকটি মহিমা ও গুণাবলী নির্দেশ করে।
মানসিক ও আধ্যাত্মিক প্রভাব
নিয়মিত পাঠের মাধ্যমে:
- ভয় ও উদ্বেগ দূর হয়
- ঈমান দৃঢ় হয়
- জীবনে বরকত আসে
- আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শান্তি বৃদ্ধি পায়
প্রতিটি নামের সহজ ব্যাখ্যা
১. আল্লাহ (Allah)
অর্থ: একমাত্র সত্যিকারের উপাস্য, স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রণকারী।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি সবকিছুর নিয়ন্ত্রণে। পৃথিবী, আকাশ, মানুষ, প্রাণী সবই তাঁর কৃপায়।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: আমরা যেকোনো বিপদ, দুঃখ বা আনন্দের মুহূর্তে আল্লাহর স্মরণ করি। নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি ভরসা স্থাপন করা যায়।
২. আল-মালিক (Al-Malik)
অর্থ: রাজাধিরাজ, সবকিছুর মালিক।
ব্যাখ্যা: আল্লাহই সমস্ত সৃষ্টির রাজা। আমরা যেটা করি, আল্লাহ তা দেখেন এবং নিয়ন্ত্রণ করেন।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: জীবনের সব সিদ্ধান্ত ও দায়িত্ব আল্লাহর হাতে ছেড়ে দেওয়া। বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহ সর্বদা আমাদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেন।
৩. আল-কুদ্দুস (Al-Quddus)
অর্থ: পরম পবিত্র, দোষমুক্ত।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ সর্বদা দোষমুক্ত ও পবিত্র। তিনি মানুষের যেকোনো ত্রুটি বা দোষ থেকে মুক্ত।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: নিজেকে পাপ ও ভুল থেকে দূরে রেখে আল্লাহর পবিত্রতার দিকে এগোতে চেষ্টা করা।
৪. আস-সালাম (As-Salam)
অর্থ: শান্তি ও নিরাপত্তার উৎস।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হলেন শান্তি ও নিরাপত্তার মূল উৎস। তিনি আমাদের হৃদয় ও জীবনকে শান্তি দেন।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: উদ্বেগ বা আতঙ্কে আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা চাওয়া। নামাজ, দোয়া ও যিকর দ্বারা অন্তরে শান্তি পাওয়া।
৫. আল-মুমিন (Al-Mu’min)
অর্থ: নিরাপত্তা প্রদানকারী।
ব্যাখ্যা: আল্লাহই আমাদের বিশ্বাস ও নিরাপত্তার উৎস। তিনি আমাদেরকে বিপদ ও শয়তান থেকে রক্ষা করেন।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: জীবনের ঝুঁকি ও বিপদের সময় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা।
৬. আল-মুহাইমিন (Al-Muhaymin)
অর্থ: সর্বত্র নজরদারি ও রক্ষা করা।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ সর্বদা আমাদের ওপর নজর রাখেন। কোনো কাজ, পরিকল্পনা বা ভাবনা তাঁর চক্ষুর আড়ালে থাকে না।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: আল্লাহর তত্ত্বাবধানে আত্মবিশ্বাসী হওয়া। মনে রাখা যে আল্লাহ সবসময় আমাদের সহায়।
৭. আল-আজিজ (Al-Aziz)
অর্থ: পরাক্রমশালী, শক্তিশালী।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ হলেন সর্বশক্তিমান। কোনো শক্তি বা প্রতিবন্ধকতা তাঁর কাছে অসাধ্য নয়।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: জীবনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আল্লাহর শক্তিতে ভরসা রাখা।
৮. আল-জাব্বার (Al-Jabbar)
অর্থ: বলবান ও শক্তিমান।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ যেকোনো পরিস্থিতি সহজে সমাধান করতে পারেন। তিনি দুষ্ট ও অবাধ্য ব্যক্তিকেও নিজের ইচ্ছায় অনুগত করতে পারেন।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: দুর্বলতা বা অসহায়তায় আল্লাহর ক্ষমতায় আশ্রয় নেওয়া।
৯. আল-মুতাকাব্বির (Al-Mutakabbir)
অর্থ: মহিমাশালী, গৌরবময়।
ব্যাখ্যা: আল্লাহর মহিমা তুলনাহীন। তিনি সর্বোচ্চ মর্যাদা ও গৌরবের অধিকারী।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: অহংকার ত্যাগ করে আল্লাহর মহিমা স্মরণ করা।
১০. আল-খালিক (Al-Khaliq)
অর্থ: সৃষ্টিকর্তা।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ সমস্ত জগতের সৃষ্টিকর্তা। তিনি নেয়া ও পরিকল্পনা করে, সবকিছু সুন্দরভাবে তৈরি করেন।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: প্রকৃতি ও জীবনের সব বৈচিত্র্যে আল্লাহর সৃষ্টির নিখুঁত পরিকল্পনা উপলব্ধি করা।
১১. আল-বার (Al-Bari’)
অর্থ: নিখুঁত সৃষ্টিকর্তা,উদ্ভাবক, পরিকল্পনাকারী।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ নিখুঁতভাবে সকল সৃষ্টিকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি কোনও ত্রুটি ছাড়াই পরিকল্পনা করেন।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: জীবনের প্রতিটি ঘটনার মধ্যে আল্লাহর সূক্ষ্ম পরিকল্পনা বোঝা ও বিশ্বাস করা।
১২. আল-মুসাওয়ার (Al-Musawwir)
অর্থ: রূপ ও বৈশিষ্ট্য প্রদানকারী।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ প্রতিটি প্রাণীর রূপ, বৈশিষ্ট্য ও চরিত্র তৈরি করেন।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: মানুষের বৈচিত্র্য ও প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে আল্লাহর সৃষ্টিকে স্মরণ করা।
১৩. আল-রহিম (Ar-Rahim / الرَّحِيمُ)
অর্থ: অসীম দাতা, সীমাহীন করুণাময়।
ব্যাখ্যা: আল-রহিম মানে এমন এক দয়ালু সত্তা, যিনি বিশেষভাবে মুমিনদের প্রতি করুণা করেন। তাঁর দয়া সীমাহীন, যা দুনিয়ায়ও আছে এবং আখিরাতেও অব্যাহত থাকবে।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: পাপ ও ভুল করলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া।
১৪. আল-রাহমান (Ar-Rahman)
অর্থ: পরম দয়ালু।
ব্যাখ্যা: আল্লাহ পরম দয়ালু, সর্বত্র দয়া ও কৃপা ছড়িয়ে দেন।
দৈনন্দিন প্রয়োগ: প্রতিটি জীবনের ক্ষেত্রে আল্লাহর দয়া আশা করা, অন্যের সঙ্গে সহানুভূতিশীল হওয়া।
নামগুলো পাঠ ও স্মরণের গুরুত্ব
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত এ আল্লাহ তায়ালার ১৪টি নাম ও গুণাবলী উল্লেখ রয়েছে। এই নামগুলো শুধু মুখে উচ্চারণের জন্য নয়- এগুলো আল্লাহর সত্তা, শক্তি, দয়া ও পরিপূর্ণতার প্রতিফলন। নিয়মিত পাঠে ঈমান দৃঢ় হয় এবং আল্লাহর নৈকট্য অনুভূত হয়।
আল্লাহ নিজেই বলেছেন: “আল্লাহর রয়েছে সবচেয়ে সুন্দর নামসমূহ (আসমাউল হুসনা), সুতরাং তোমরা সেই নামগুলো দ্বারা তাঁকে ডাকো।”
(সূরা আল-আ’রাফ: ১৮০)
হাদিস ও ফজিলত
১. পাপ মোচন ও সওয়াব অর্জন
মাকিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি সকালে উপস্থিত হয়ে তিনবার “আউযু বিল্লাহিস সামিয়িল আলীমি মিনাশ শাইতানির রাজীম” এরপর সুরা আল হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করবে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য সত্তর হাজার ফিরেশতা নিয়োজিত করবেন। তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য দু’আ করতে থাকবেন। সে ঐ দিন মৃত্যুবরণ করলে তার শহীদী মৃত্যু হবে। যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় পাঠ করবে, সেও একই রকম গৌরবের অধিকারী হবে। (তিরমিজি, হাদিস: ২৯২২)
২. আখিরাতে মর্যাদা ও পুরস্কার
যারা আল্লাহর নামসমূহ মুখস্থ করে, বুঝে এবং সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন “আল্লাহর ৯৯টি নাম আছে। যে ব্যক্তি উহা মুখস্থ করিবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
(সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
অতএব, যখন আমরা দোয়া করি, আল্লাহর নাম উচ্চারণ করলে দোয়া আরও অধিক কবুলের উপযুক্ত হয়।
সূরা হাশরের শেষ আয়াতগুলো পাঠ করলে হৃদয় শান্ত হয়, ভয় দূর হয় এবং অন্তরে আত্মবিশ্বাস আসে।
সকালে ও সন্ধ্যায় পড়ার ফজিলত
- সকাল: সারাদিন আল্লাহর নিরাপত্তা
- সন্ধ্যা: সারারাত নিরাপদ রাখা
কিভাবে ও কখন পড়া উচিত
- ফজরের পর ও মাগরিবের পর একবার করে
নিয়মিত পাঠের উপকারিতা
আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যায় এই সূরার শেষ তিন আয়াত পাঠ করা অনেক সওয়াবের আমল এবং এই আয়াতগুলো পাঠ করলে আল্লাহ সত্তর হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করেন যারা সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঠকের জন্য রহমতের দোয়া করতে থাকে
বাস্তব জীবনে পাঠের গুরুত্ব
মানসিক শান্তি ও মনোবল বৃদ্ধি
- দৈনন্দিন চাপ ও উদ্বেগ কমানো
- আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি
আল্লাহর নৈকট্য অনুভূত করা
- আধ্যাত্মিক প্রশান্তি
- বিপদে ভরসা
শেষ তিন আয়াতের সারসংক্ষেপ
আল্লাহর নাম ও গুণাবলী স্মরণের গুরুত্ব
- প্রতিটি নাম ঈমান দৃঢ় করে
- আত্মাকে শক্তিশালী করে
মুমিনদের জন্য পাঠের বার্তা ও প্রেরণা
- আল্লাহর কাছে সব আশা রাখা
- দৈনন্দিন জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা
প্রতিদিন পাঠের সুপারিশ
- সকালে ও রাতে পাঠ করলে জীবনে বরকত আসে
- পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবনে আল্লাহর রহমত বজায় থাকে
সূরা হাশর সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
১. সূরা হাশরের বিষয়বস্তু কী?
উত্তরঃ এই সূরাটির বিষয়বস্তু গভীরভাবে আল্লাহর শক্তি, নবীজির নেতৃত্ব, মুমিনদের ঐক্য, মুনাফিকদের চরিত্র, এবং আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর তাফসিরকে কেন্দ্র করে গঠিত।
২. সূরা হাশর কোথায় নাযিল হয়েছিল?
উত্তরঃ মদীনায় নাজিল হয়েছে
৩. সূরা হাশর এর বাংলা অর্থ কী?
উত্তরঃ সূরা হাশর” (سورة الحشر) শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ “الحشر (আল-হাশর)” থেকে, যার বাংলা অর্থ হলো “সমবেত করা”, “একত্র করা” বা “সমাবেশ”।
৪. হাশর শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ হাশর (الحشر) শব্দের মূল অর্থ হলো — লোকজনকে একত্র করা, সমবেত করা বা জড়ো করা।
৫. হাশর বলতে কি বোঝায়?
উত্তরঃ হাশর” (الحشر) শব্দটির যার মধ্যে লুকিয়ে আছে দুনিয়ার ইতিহাস, আখিরাতের সতর্কতা এবং আল্লাহর শক্তির প্রকাশ।
৬. সূরা হাশর এর আয়াত কত?
উত্তরঃ আয়াত সংখ্যা ২৪
{ “@context”: “https://schema.org”, “@type”: “FAQPage”, “mainEntity”: [ { “@type”: “Question”, “name”: “সূরা হাশরের বিষয়বস্তু কী?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “এই সূরাটির বিষয়বস্তু গভীরভাবে আল্লাহর শক্তি, নবীজির নেতৃত্ব, মুমিনদের ঐক্য, মুনাফিকদের চরিত্র, এবং আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর তাফসিরকে কেন্দ্র করে গঠিত।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “সূরা হাশর কোথায় নাযিল হয়েছিল?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “সূরা হাশর মদীনায় নাজিল হয়েছে।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “সূরা হাশর এর বাংলা অর্থ কী?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: ““সূরা হাশর” (سورة الحشر) শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ “الحشر (আল-হাশর)” থেকে, যার বাংলা অর্থ হলো “সমবেত করা”, “একত্র করা” বা “সমাবেশ”।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “হাশর শব্দের অর্থ কী?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “হাশর (الحشر) শব্দের মূল অর্থ হলো — লোকজনকে একত্র করা, সমবেত করা বা জড়ো করা।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “হাশর বলতে কি বোঝায়?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: ““হাশর” (الحشر) শব্দটির মধ্যে লুকিয়ে আছে দুনিয়ার ইতিহাস, আখিরাতের সতর্কতা এবং আল্লাহর শক্তির প্রকাশ।” } }, { “@type”: “Question”, “name”: “সূরা হাশর এর আয়াত কত?”, “acceptedAnswer”: { “@type”: “Answer”, “text”: “সূরা হাশর-এর আয়াত সংখ্যা ২৪।” } } ] }



