ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে দল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের বড় জয় উদযাপনে ভিন্নধর্মী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটি জানিয়েছে, তারা বিজয় উপলক্ষে কোনো আনন্দমিছিল, শোভাযাত্রা বা র্যালি করবে না। বরং শুকরিয়া আদায়, দোয়া মাহফিল ও শব্বেদারি (নৈশ ইবাদত) আয়োজনের মাধ্যমে কর্মসূচি পালন করবে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ স্বাক্ষরিত আরেক বিজ্ঞপ্তিতেও জানানো হয়, বিজয়ের এই মুহূর্তে সংগঠনটি আধ্যাত্মিক ও আত্মসমালোচনামূলক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে চায়।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শুকরিয়া আদায় করে দোয়া মাহফিল, শব্বেদারি আয়োজন, শহীদদের কবর জিয়ারত, শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ। এতে অংশগ্রহণের জন্য শিবিরের সব মহানগর, শহর, বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা শাখাকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
ছাত্রশিবিরের নেতারা বলেন, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে জয় শুধু রাজনৈতিক সাফল্য নয়, বরং দায়িত্ব ও ত্যাগের নতুন অঙ্গীকার। তাই তারা বিজয় উদযাপনে বাহ্যিক শোভাযাত্রা থেকে বিরত থেকে আত্মশুদ্ধি, কৃতজ্ঞতা ও দায়িত্বশীলতার পথে এগোতে চান।
এদিকে আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া জানান ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের নবনির্বাচিত সহসভাপতি সাদিক কায়েম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ। তারা জানান, এই জয় শুধু একটি নির্বাচনী ফলাফল নয়, বরং শিক্ষার্থীদের আস্থার প্রতিফলন। তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “এই বিজয়ের জন্য আমরা মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। শহীদদের ত্যাগের কথা স্মরণ করছি। বিজয়ের এই আনন্দে আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। আমরা সেই দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
সংগঠনটি স্পষ্ট করেছে, আগামী দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও আধ্যাত্মিক পরিবেশে সম্পন্ন হবে। এর মাধ্যমে তারা একদিকে যেমন শহীদদের স্মরণ করবে, অন্যদিকে নিজেদের নতুন দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত করবে।
ছাত্রশিবিরের এই ঘোষণার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচনী বিজয়ের পর তারা জনসমাগমভিত্তিক কর্মসূচির চেয়ে আত্মশুদ্ধি ও সংগঠনের ভেতরকার ঐক্যকে প্রাধান্য দিতে চাইছে।