প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করার সময় আইনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরপেক্ষ ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনশৃঙ্খলা ও ‘রুল অব ল’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান
সিইসি উল্লেখ করেন, “আমরা অনেক সময় আইনের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাশীল হতে পারি না। কিন্তু যেসব জাতি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তারাই প্রকৃত অর্থে সভ্য জাতি।” তিনি আরো বলেন, “আমরা ‘রুল অব ল’ চাই, অর্থাৎ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রয়োগ করতে হবে, ‘রুল বাই ল’ নয়, যেখানে আইন শাসনের হাতিয়ার হয়ে যায়।”
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন ইউএনওদের উদ্দেশ্যে বলেন, “নির্বাচনকালীন যেকোনো দায়িত্ব আইনসঙ্গতভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে।” তিনি নির্দেশ দেন, কোনো ধরনের চাপের কাছে নতি স্বীকার করা যাবে না এবং আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
নির্বাচন পরিচালনায় সমন্বয়ের গুরুত্ব
উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, “নির্বাচন পরিচালনায় সমন্বয় একটি বড় বিষয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। এ দায়িত্ব মূলত আপনাদের হাতে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সমস্যা দেখা দিলে তা শুরুতেই মোকাবিলা করতে হবে। সময়মতো উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করলে অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব।”
প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সিইসি এই প্রশিক্ষণকে পেশাগত জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “শেখার কোনো শেষ নেই। এই প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা মাঠ পর্যায়ে কাজে লাগাতে হবে এবং সহকর্মীদের মধ্যেও তা ছড়িয়ে দিতে হবে।”
তিনি জানান, আরপিও সংশোধনের পর প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল হালনাগাদ করা হবে এবং কোনো বিষয় বাদ পড়লে অনলাইনের মাধ্যমে সেই ঘাটতি পূরণ করা হবে।
কেন এই নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ?
- স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন: আইন ও পেশাদারিত্ব মেনে কাজ করলে নির্বাচন আরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।
- গণতন্ত্রের শক্তি বৃদ্ধি: সঠিক নেতৃত্ব ও দায়িত্বশীলতা গণতন্ত্রকে দৃঢ় করে।
- সঙ্কট মোকাবিলায় দ্রুততা: সময়মতো পদক্ষেপ নির্বাচনী জটিলতা কমাতে সাহায্য করবে।
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীনের নির্দেশনা বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা তাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইন ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দেশের গণতন্ত্রকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।




