বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২০, ২০২৫

অ্যালার্জি থেকে মুক্তি: স্থায়ী চিকিৎসা ও প্রতিরোধের কার্যকরী উপায়

বহুল পঠিত

অ্যালার্জি কী এবং কেন হয়?

অ্যালার্জি হলো আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া যা সাধারণত ক্ষতিকারক নয় এমন পদার্থের বিরুদ্ধে সৃষ্টি হয়। এই পদার্থগুলোকে অ্যালার্জেন বলা হয়। যখন কোনো ব্যক্তির শরীরে অ্যালার্জেন প্রবেশ করে, তখন তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভুলবশত এটিকে ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করে এবং হিস্টামিন নামক রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে। এই হিস্টামিন অ্যালার্জির লক্ষণগুলো সৃষ্টি করে যেমন চুলকানি, ফুসকুড়ি, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি এবং শ্বাসকষ্ট। অ্যালার্জির কারণ জেনেটিক হতে পারে, যদি পরিবারের অন্য কেউ অ্যালার্জিতে ভুগে থাকে। পরিবেশগত কারণ, জীবনযাপন পদ্ধতি এবং খাদ্যাভ্যাসও অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। শিশুদের মধ্যে অ্যালার্জি বেশি দেখা যায়, তবে যেকোনো বয়সেই অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির প্রকারভেদ অনেক রকমের হয়, যেমন খাদ্য অ্যালার্জি, ডার্মাটাইটিস, হাঁপানি, নাকের অ্যালার্জি এবং ওষুধের অ্যালার্জি।

অ্যালার্জির সাধারণ লক্ষণ ও প্রকারভেদ

অ্যালার্জির লক্ষণগুলো অ্যালার্জেনের ধরন এবং ব্যক্তির সংবেদনশীলতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফুসকুড়ি, লাল হওয়া, ফোলা, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, চোখ চুলকানো ও লাল হওয়া, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ অনুভব করা, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া এবং মাথাব্যথা। অ্যালার্জির প্রকারভেদ অনেক রকমের হয়। খাদ্য অ্যালার্জি হয় নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণের পর, যেমন দুধ, ডিম, বাদাম, সামুদ্রিক খাবার বা গম। শ্বাসপ্রশ্বাসের অ্যালার্জি হয় বাতাসে থাকা অ্যালার্জেন থেকে, যেমন পরাগরেণু, ধুলোবালি, পোষা প্রাণীর লোম বা ছত্রাক। ত্বকের অ্যালার্জি বা কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস হয় যখন ত্বক সরাসরি কোনো অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসে। ওষুধের অ্যালার্জি হয় নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণের পর। কীটপতঙ্গের অ্যালার্জি হয় মশা, মৌমাছি বা অন্যান্য কীটপতঙ্গের কামড়ের ফলে। অ্যালার্জির তীব্রতা সামান্য থেকে জীবন-হুমকি পর্যন্ত হতে পারে, তাই লক্ষণগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যালার্জির স্থায়ী চিকিৎসা: আধুনিক পদ্ধতি

অ্যালার্জির স্থায়ী চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু আধুনিক পদ্ধতি রয়েছে যা রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী স্বস্তি দিতে পারে। ইমিউনোথেরাপি বা অ্যালার্জি শট একটি কার্যকরী পদ্ধতি যেখানে ক্রমাগত অ্যালার্জেনের ছোট ডোজ দেওয়া হয় যাতে শরীর ধীরে ধীরে এর প্রতি অভ্যস্ত হয়ে যায়। এই চিকিৎসা সাধারণত ৩-৫ বছর পর্যন্ত চলতে পারে এবং এটি অনেক ক্ষেত্রে অ্যালার্জির লক্ষণগুলো দীর্ঘমেয়াদী বা আজীবন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। সাবলিংগুয়াল ইমিউনোথেরাপি (SLIT) হলো একটি নতুন পদ্ধতি যেখানে অ্যালার্জেনের ট্যাবলেট বা তরল জিহ্বার নিচে রাখা হয়। বায়োলজিক্যাল থেরাপি হলো আরেকটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি যা নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি ব্যবহার করে শরীরের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া কমায়। এই চিকিৎসা বিশেষ করে গুরুতর হাঁপানি বা একজিমার ক্ষেত্রে কার্যকরী। ফার্মাকোজেনোমিক্স হলো একটি নতুন ক্ষেত্র যা ব্যক্তির জেনেটিক গঠনের উপর ভিত্তি করে ওষুধের প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করে, যা অ্যালার্জি চিকিৎসাকে আরও কার্যকরী করে তোলে। এই আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো রোগীদের অ্যালার্জি থেকে দীর্ঘমেয়াদী মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে, তবে এগুলো অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে করা উচিত।

অ্যালার্জি প্রতিরোধের কার্যকরী উপায়

অ্যালার্জি প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমেই অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থগুলো চিহ্নিত করা প্রয়োজন, যা অ্যালার্জি টেস্টের মাধ্যমে সম্ভব। বাড়িতে ধুলোবালি কমাতে নিয়মিত পরিষ্কার করা, হেপা ফিল্টার ব্যবহার করা এবং আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। পরাগরেণুর মৌসুমে বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক পরিধান করা এবং বাড়ি ফিরে এসে কাপড় পরিবর্তন করা উচিত। পোষা প্রাণী থাকলে তাদের লোম থেকে দূরে থাকতে হবে এবং নিয়মিত স্নান করাতে হবে। খাদ্য অ্যালার্জি প্রতিরোধের জন্য অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত এবং খাবারের লেবেল সাবধানে পড়া উচিত। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে স্তন্যপান করানো অ্যালার্জির ঝুঁকি কমাতে পারে। ধূমপান এবং দ্বিতীয় হাতের ধোঁয়া অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়ায়, তাই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা অ্যালার্জির ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে। অ্যালার্জি প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অ্যালার্জেন থেকে দূরে থাকা এবং পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা।

প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ

অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রাকৃতিক উপায়গুলো অনেক ক্ষেত্রে কার্যকরী হতে পারে। মধু নিয়মিত খাওয়া পরাগরেণু অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে, কারণ এতে স্থানীয় পরাগরেণুর ছোট পরিমাণ থাকে যা শরীরকে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করে তোলে। হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে। আদা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া কমাতে এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল যেমন লেবু, কমলা, আমলা ইত্যাদি অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে কারণ এটি হিস্টামিনের নিঃসরণ কমায়। কোয়ারসেটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন পেঁয়াজ, আপেল, বেরি ফল ইত্যাদি অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে কারণ এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিহিস্টামিন হিসেবে কাজ করে। নাসাল রিন্সিং বা নাক ধোয়া নাকের অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে। এসেনশিয়াল অয়েল যেমন ল্যাভেন্ডার, পিপারমিন্ট বা ইউক্যালিপটাস অয়েল ব্যবহার করে শ্বাসপ্রশ্বাসের অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমানো যেতে পারে। এছাড়াও, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, যোগব্যায়াম এবং ধ্যান অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে প্রাকৃতিক চিকিৎসা গ্রহণের আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যদি অ্যালার্জি গুরুতর হয়।

শিশুদের অ্যালার্জি: চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

শিশুদের অ্যালার্জি একটি সাধারণ সমস্যা যা তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনকে প্রভাবিত করতে পারে। শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ অ্যালার্জির মধ্যে রয়েছে খাদ্য অ্যালার্জি, বাতাসে থাকা অ্যালার্জেন যেমন ধুলোবালি এবং পরাগরেণু, এবং ত্বকের অ্যালার্জি যেমন একজিমা। শিশুদের অ্যালার্জি চিকিৎসার জন্য প্রথমেই অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থটি চিহ্নিত করা প্রয়োজন, যা স্কিন প্রিক টেস্ট বা ব্লাড টেস্টের মাধ্যমে সম্ভব। খাদ্য অ্যালার্জির ক্ষেত্রে, অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবারটি শিশুর খাদ্যতালিকা থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দিতে হবে। শিশুদের জন্মের পর প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র স্তন্যপান করানো অ্যালার্জির ঝুঁকি কমাতে সাহায়তা করতে পারে। বাড়িতে ধুলোবালি কমাতে নিয়মিত পরিষ্কার করা, হেপা ফিল্টার ব্যবহার করা এবং আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা শিশুদের অ্যালার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে। পোষা প্রাণী থাকলে তাদের লোম থেকে শিশুদের দূরে রাখা উচিত। শিশুদের অ্যালার্জির লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফুসকুড়ি, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং পেট ব্যথা। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবিলম্বে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত। শিশুদের অ্যালার্জির চিকিৎসায় অ্যান্টিহিস্টামিন, নাসাল স্প্রে এবং কিছু ক্ষেত্রে অ্যালার্জি শট ব্যবহার করা হয়। তবে শিশুদের ওষুধ দেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অ্যালার্জি থেকে মুক্তির জীবনযাপন

অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে একটি সুস্থ জীবনযাপন অপরিহার্য। প্রথমেই অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলো এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। বাড়িতে একটি অ্যালার্জি-মুক্ত পরিবেশ তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ, যার জন্য নিয়মিত পরিষ্কার করা, হেপা ফিল্টার ব্যবহার করা এবং আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। খাদ্য অ্যালার্জি থাকলে, খাবারের লেবেল সাবধানে পড়া এবং অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক পরিধান করা এবং বাড়ি ফিরে এসে কাপড় পরিবর্তন করা অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে। স্ট্রেস অ্যালার্জির লক্ষণগুলো বাড়িয়ে তুলতে পারে, তাই স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কৌশল যেমন যোগব্যায়াম, ধ্যান বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করা উচিত। পর্যাপ্ত ঘুম নেওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা অ্যালার্জির লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলো গুরুতর হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত এবং নির্ধারিত ওষুধ নিয়মিত গ্রহণ করা উচিত। অ্যালার্জি থেকে মুক্তির জন্য একটি সুস্থ জীবনযাপন অপরিহার্য, যার জন্য সচেতনতা এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।

প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ১: অ্যালার্জি কী? 

উত্তর: অ্যালার্জি হলো আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া যা সাধারণত ক্ষতিকারক নয় এমন পদার্থের বিরুদ্ধে সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ২: অ্যালার্জি কি জেনেটিক হয়? 

উত্তর: হ্যাঁ, অ্যালার্জির প্রবণতা জেনেটিক হতে পারে। যদি পরিবারের অন্য কেউ অ্যালার্জিতে ভুগে থাকে, তবে অন্য সদস্যদের অ্যালার্জি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

প্রশ্ন ৩: অ্যালার্জির সাধারণ লক্ষণগুলো কী কী? 

উত্তর: অ্যালার্জির সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফুসকুড়ি, লাল হওয়া, ফোলা, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, চোখ চুলকানো ও লাল হওয়া, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ অনুভব করা, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া এবং মাথাব্যথা।

প্রশ্ন ৪: অ্যালার্জির প্রকারভেদ কী কী? 

উত্তর: অ্যালার্জির প্রকারভেদ অনেক রকমের হয়, যেমন খাদ্য অ্যালার্জি, শ্বাসপ্রশ্বাসের অ্যালার্জি, ত্বকের অ্যালার্জি বা কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস, ওষুধের অ্যালার্জি এবং কীটপতঙ্গের অ্যালার্জি।

প্রশ্ন ৫: অ্যালার্জি নির্ণয়ের জন্য কী কী পরীক্ষা করা হয়? 

উত্তর: অ্যালার্জি নির্ণয়ের জন্য স্কিন প্রিক টেস্ট, ব্লাড টেস্ট, প্যাচ টেস্ট, এলিমিনেশন ডায়েট টেস্ট এবং চ্যালেঞ্জ টেস্ট করা হয়।

প্রশ্ন ৬: অ্যালার্জির স্থায়ী চিকিৎসা কি সম্ভব? 

উত্তর: হ্যাঁ, অ্যালার্জির স্থায়ী চিকিৎসা সম্ভব। ইমিউনোথেরাপি বা অ্যালার্জি শট একটি কার্যকরী পদ্ধতি যা অনেক ক্ষেত্রে অ্যালার্জির লক্ষণগুলো দীর্ঘমেয়াদী বা আজীবন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন ৭: অ্যালার্জি প্রতিরোধের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে? 

উত্তর: অ্যালার্জি প্রতিরোধের জন্য অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থগুলো এড়িয়ে চলা, বাড়িতে ধুলোবালি কমাতে নিয়মিত পরিষ্কার করা, হেপা ফিল্টার ব্যবহার করা, পরাগরেণুর মৌসুমে বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক পরিধান করা, এবং অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।

প্রশ্ন ৮: খাদ্য অ্যালার্জি কী?

উত্তর: খাদ্য অ্যালার্জি হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নির্দিষ্ট খাবারকে ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করে এবং অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সাধারণ খাদ্য অ্যালার্জির মধ্যে রয়েছে দুধ, ডিম, বাদাম, সামুদ্রিক খাবার বা গম।

প্রশ্ন ৯: শিশুদের অ্যালার্জি প্রতিরোধের জন্য কী করা যেতে পারে? 

উত্তর: শিশুদের অ্যালার্জি প্রতিরোধের জন্য জন্মের পর প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র স্তন্যপান করানো, বাড়িতে ধুলোবালি কমাতে নিয়মিত পরিষ্কার করা, হেপা ফিল্টার ব্যবহার করা, এবং পোষা প্রাণী থাকলে তাদের লোম থেকে শিশুদের দূরে রাখা উচিত।

প্রশ্ন ১০: অ্যালার্জির জন্য কোন ওষুধ ব্যবহার করা হয়? 

উত্তর: অ্যালার্জির জন্য সাধারণত অ্যান্টিহিস্টামিন, ডিকঞ্জেস্ট্যান্ট, কর্টিকোস্টেরয়েড, লিউকোট্রিন মডিফায়ার এবং মাস্ট সেল স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করা হয়। তবে ওষুধ গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

প্রশ্ন ১১: অ্যালার্জির জন্য প্রাকৃতিক চিকিৎসা কী কী? 

উত্তর: অ্যালার্জির জন্য প্রাকৃতিক চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে মধু খাওয়া, হলুদ ব্যবহার করা, আদা খাওয়া, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল খাওয়া, কোয়ারসেটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, নাসাল রিন্সিং বা নাক ধোয়া, এবং এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা।

প্রশ্ন ১২: অ্যালার্জির জন্য কখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত? 

উত্তর: অ্যালার্জির লক্ষণগুলো গুরুতর হলে, যেমন শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ অনুভব করা, মুখ, ঠোঁট বা জিহ্বা ফোলা, বা অ্যালার্জির লক্ষণগুলো দৈনন্দিন জীবনযাপনকে প্রভাবিত করলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

প্রশ্ন ১৩: অ্যালার্জি এবং হাঁপানির মধ্যে সম্পর্ক কী? 

উত্তর: অ্যালার্জি এবং হাঁপানির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে, অ্যালার্জি হাঁপানির লক্ষণগুলো বাড়িয়ে তুলতে পারে বা হাঁপানির আক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। অ্যালার্জিক হাঁপানি হলো হাঁপানির একটি সাধারণ প্রকার যা অ্যালার্জেনের প্রতি শরীরের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ১৪: অ্যালার্জির জন্য কী ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত? 

উত্তর: অ্যালার্জির জন্য যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত তা ব্যক্তির অ্যালার্জির ধরনের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, প্রক্রিয়াজাত খাবার, কৃত্রিম রঙ এবং সংরক্ষণকারী পদার্থ সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। যদি কোনো নির্দিষ্ট খাবারে অ্যালার্জি থাকে, সেই খাবারটি সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলা উচিত।

আরো পড়ুন

ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়: ক্যান্সার ঝুঁকি কমানোর কার্যকরী পদ্ধতি

সুস্থ খাদ্যাভ্যাস: ক্যান্সার প্রতিরোধের প্রথম পদক্ষেপ সুষম খাদ্য গ্রহণ ক্যান্সার প্রতিরোধের অন্যতম কার্যকরী উপায়। প্রতিদিন ফলমূল, শাকসবজি এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। লাল মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত মাংসের পরিমাণ সীমিত...

সুস্থতার চাবিকাঠি: নারীর প্রতিদিনের স্মার্ট ডায়েট প্ল্যান

ভূমিকা: ওজন নয়, সুস্থতাই মূল মন্ত্র  আধুনিক জীবনে নারীরা ওজন কমানোর পেছনে ছুটে। কিন্তু প্রকৃত সুখ নিহিত আছে সুস্থতায়। একটি স্মার্ট ডায়েট প্ল্যান আপনাকে দেবে...
- Advertisement -spot_img

আরও প্রবন্ধ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ প্রবন্ধ