এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭ বাছাইপর্বে অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ- দিল্লিকে হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের দাপুটে জয় ফিরিয়ে এনেছে দেশজুড়ে ফুটবল উন্মাদনার দিনগুলো।
ভারতের বিপক্ষে ২০০৩ সালের সাফ সেমিফাইনালের পর দীর্ঘ ২২ বছর লাল-সবুজরা জয়ের স্বাদ পেল।
হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা আজ প্রমাণ করলো-বাংলাদেশ ফুটবল আবার জেগে উঠছে।
মোরসালিনের ১১ মিনিটের গোলেই বদলে গেল ম্যাচের গল্প
জাতীয় স্টেডিয়ামে দর্শকে ঠাসা উত্তেজনার মাঝে ম্যাচের শুরুতেই দারুণ এক আক্রমণ সাজায় বাংলাদেশ।
মধ্যমাঠ থেকে দুর্দান্ত দৌড়ে বাম প্রান্ত দিয়ে এগিয়ে যান রাকিব হোসেন। তাঁর নিখুঁত পাস পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ ফিনিশিংয়ে গোল করেন শেখ মোরসালিন।
ভারতের গোলরক্ষক সান্ধু বল ধরার আগেই স্টেডিয়াম জুড়ে ফেটে পড়ে আনন্দের বিস্ফোরণ।
হামজা–রাকিবদের রক্ষণের দেয়ালে ভারতের সব চেষ্টা ব্যর্থ
৩০ মিনিটে ভারতের চাঙ্গে গোল করতে পারতেন। কিন্তু ঠিক তখনই বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে দেন মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী-গোলরেখার সামনে থেকে তাঁর দুর্দান্ত হেড ক্লিয়ারেন্সে রক্ষা পায় দল।
৩৭ মিনিটে ভারতের বিপজ্জনক কর্নারও ঠেকান রাকিব।
পুরো ম্যাচজুড়ে রক্ষণভাগ যেন পরিণত হয় অটল এক দুর্গে।
উত্তেজনা-টানটান মুহূর্তে হলুদ কার্ড, ইনজুরি আর সুযোগ হারানোর আক্ষেপ
৩৪ মিনিটে বিক্রম ও তপুর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে-হলুদ কার্ড দেখতে হয় দুজনকেই।
এদিকে ২৮ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন তারিক কাজী; তার জায়গায় শাকিল তপু নামেন।
৪৩ মিনিটে হামজার নেওয়া বুলেটগতির শট সামান্য বাইরে গেলে ব্যবধান বাড়ানো হয়নি।
বাংলাদেশের বাছাইপর্বের প্রথম জয়-টানা পাঁচ ম্যাচ পর আন্তর্জাতিক সাফল্য
এই জয়ে বাছাইপর্বে পাঁচ ম্যাচ শেষে ৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রয়েছে বাংলাদেশ।
আগামী মার্চে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলবে নিজেদের শেষ ম্যাচ।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটি বাংলাদেশের টানা পাঁচ ম্যাচ পর প্রথম জয়, সর্বশেষ জয় ছিল ভুটানের বিপক্ষে (২–০), গত জুনে।
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের অভিনন্দনের বন্যা
ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুইয়া লেখেন-
“এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়। অভিনন্দন বাংলাদেশ ফুটবল দলকে।”
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী লেখেন-
“A win after many years! Huge congratulations ❤️
When entering the stadium, journalists asked my prediction. I said: ‘Bangladesh will win 1-0.’
Guys, you may release that footage now!”
আইন ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল লিখেছেন-
“ভারতের বিরুদ্ধে বিজয়ের জন্য এরচেয়ে ভালো সময় আর কী হতে পারে! অভিনন্দন বাংলাদেশ দলকে।”
প্রবাসি সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন লিখেছেন-
“রেন্ডিয়া 🖕 কেমন লাগলো? ১-০।”
ঐতিহাসিক জয়ে বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন আশা
আজকের ম্যাচ শুধুই একটি জয় নয়-এটি আত্মবিশ্বাস, মর্যাদা, এবং যোদ্ধা মনোভাব ফিরে পাওয়ার মুহূর্ত।
দিল্লিকে ধাক্কা দিয়ে বাংলাদেশ দাপুটে জয়-এ বার্তা প্রমাণ করলো, বাংলাদেশ ফুটবল আবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জেগে ওঠার পথে।




