বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ঘোষণা দিয়েছেন যে, ব্যাংকের মূলধন যদি ১০ শতাংশের নিচে নেমে যায় এবং প্রভিশন ঘাটতি থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বোনাস বন্ধ থাকবে। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশ (এনআরবি) এর আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই বার্তা দেন।
গভর্নর বলেন, “ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই পর্যাপ্ত মূলধন ও প্রভিশন রক্ষা করতে হবে। তা না হলে শুধু বোনাস নয়, শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্টও দেওয়া হবে না।” তিনি আরও যোগ করেন যে এই পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর জানান, খেলাপি ঋণের ঝুঁকি এখনো গুরুতর। জুন মাসের প্রতিবেদনে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ খেলাপির আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। রবিবার থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে।
তিনি আরও জানান, দেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ইতিবাচক অবস্থায় আছে, রেমিট্যান্স প্রবাহ ২১ শতাংশ বেড়েছে এবং রপ্তানি আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি হুন্ডির ব্যবহার কমে আসায় প্রবাসী আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ লিকেজ বন্ধ হয়েছে। তবে, ডলারের সংকট না থাকলেও টাকার সংকট বিদ্যমান, যা মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের নিচে নামানোর লক্ষ্যে কাজ করছে।
অর্থনীতিবিদ ড. রুমান আহমেদ বলেন, “গভর্নরের এই উদ্যোগ ব্যাংকিং সেক্টরের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক হবে। দীর্ঘমেয়াদে এটি অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।”
গভর্নরের এই ঘোষণা ও সতর্কবার্তা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে নতুন দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আর্থিক শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হলে দেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে এবং ব্যাংকিং খাত ফিরে পাবে সুস্থ পরিবেশ।