ব্রাজিল জাতীয় দল ফ্রান্সের লিলে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ১-১ ড্র করেছে। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের জন্য এটি হতাশাজনক ফলাফল। বিশেষ করে সেনেগালের বিরুদ্ধে গত ম্যাচে দাপুটে ফুটবল দেখানো ব্রাজিল এই ম্যাচে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি।
ম্যাচের প্রাথমিক পরিসংখ্যান
- ম্যাচ টাইপ: প্রীতি ম্যাচ
- ফাইনাল স্কোর: ব্রাজিল ১-১ তিউনিসিয়া
- গোলস: হাজেম মাস্তুরি (২৩’), এস্তেভোঁ (৪৪’)
- পেনাল্টি: ব্রাজিল ২, সফল ১, মিস ১ (লুকাস পাকেতা)
- বল দখলের হার: ৭০% ব্রাজিল, ৩০% তিউনিসিয়া
- শট: ২২ (ব্রাজিল), ৮ (তিউনিসিয়া)
- লক্ষ্যে শট: ৩ (ব্রাজিল), ১ (তিউনিসিয়া)
প্রথমার্ধ বিশ্লেষণ
ম্যাচের শুরুতে ব্রাজিল বেশ কিছু সমস্যার মুখোমুখি হয়। ২৩ মিনিটে তিউনিসিয়ার হাজেম মাস্তুরি ব্রাজিলের ডিফেন্সে ফাঁকায় শট দিয়ে প্রথম গোল করেন।
পিছিয়ে পড়ার পর ভিনিসিউস এবং রদ্রিগোরা তিউনিসিয়ার ওপর চাপ তৈরি করতে শুরু করেন। ৩৮ মিনিটে রদ্রিগোর ফ্রি-কিক থেকে ক্রস কর্নারে পরিবর্তিত হয়, যা ব্রাজিলের আক্রমণকে কিছুটা ত্রাস সৃষ্টিকারী করে।
বিরতির আগে ভিএআর-এর সাহায্যে পেনাল্টি পেয়ে সমতায় ফেরে ব্রাজিল। গোলটি করেন ১৮ বছর বয়সী চেলসি ফরোয়ার্ড এস্তেভোঁ, যিনি জাতীয় দলের শেষ ছয় ম্যাচে পাঁচ গোল করে দারুণ ছন্দে রয়েছেন।
দ্বিতীয়ার্ধ বিশ্লেষণ
দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের আক্রমণগুলো ধারালো ছিল না। অধিকাংশ সময় তারা তিউনিসিয়ার অর্ধে খেললেও গোলরক্ষককে কার্যকরভাবে পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। ৭৬ মিনিটে আরেকটি পেনাল্টি মিস করেন লুকাস পাকেতা।
চোটের কারণে এদের মিলিতাও মাঠ ছাড়েন। তার এই চোট রেয়াল মাদ্রিদের জন্য বড় দুর্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করে।
ব্রাজিলের শট সংখ্যা ছিল ২২, তবে মাত্র তিনটি লক্ষ্যভিত্তিক। যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে এস্তেভোঁর শট পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়, যা তাদের জন্য একটি সুযোগ ছিল হাসিমুখে মাঠ ছাড়ার।
খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স
এস্তেভোঁ
- জাতীয় দলের শেষ ছয় ম্যাচে পাঁচ গোল করেছেন।
- তরুণ চেলসি ফরোয়ার্ড হিসেবে দলের আক্রমণকে জীবন্ত রাখছেন।
রদ্রিগো ও ভিনিসিউস
- পজিশনিং ও বল চাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
- তবে শেষ শটগুলো তেমন কার্যকর হয়নি।
মিলিতাও
- অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার চোটের কারণে মাঠ ছাড়েন।
- রেয়াল মাদ্রিদের জন্য সম্ভাব্য বড় উদ্বেগের বিষয়।
লুকাস পাকেতা
- ৭৬ মিনিটে পেনাল্টি মিস করে দলকে হতাশ করেছেন।
টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ
- বল দখলের আধিপত্য: ব্রাজিলের ৭০% পজেশন থাকলেও আক্রমণ কার্যকর হয়নি।
- লক্ষ্যহীন শট: ২২টি শটের মধ্যে মাত্র ৩টি লক্ষ্যভিত্তিক।
- ডিফেন্স কমান্ড: মিলিতাওর চোট তাদের ডিফেন্সের স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করেছে।
- পেনাল্টি দক্ষতা: দুই পেনাল্টির মধ্যে একটিই সফল, যা তাদের গোলজাল সক্ষমতাকে সীমিত করেছে।
ভবিষ্যতের প্রভাব
- কার্লো আনচেলত্তির দায়িত্ব নেওয়ার পর চারটি ফিফা উইন্ডো পার হয়েছে, কোনোটিতেই পুরোপুরি সফল হয়নি ব্রাজিল।
- বিশ্বকাপের মাত্র সাত মাস বাকি। এই সময়ছাড়ায় ধারাবাহিকতা হারানো এবং ক্লান্তি স্পষ্ট হওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
- তরুণ খেলোয়াড়দের ওপর নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায়, ম্যাচের মান ও প্রস্তুতি নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রাজিল বনাম তিউনিসিয়া ম্যাচ ১-১ ড্র হওয়া একটি সতর্কবার্তা। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলকে আবারও ফুটবলের ধারাবাহিকতা ও আক্রমণ দক্ষতা নিয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বকাপের আগে এই ধরনের প্রীতি ম্যাচগুলো তাদের দুর্বলতা এবং শক্তি দুইই চিহ্নিত করতে সহায়ক।




