জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে ঐতিহাসিক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, যেখানে ১৪২টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে মাত্র ১০টি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয় এবং ১২টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ফ্রান্স ও সৌদি আরব।
‘নিউইয়র্ক ঘোষণা’ নামে পরিচিত এই প্রস্তাবে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য কাজ ত্বরান্বিত করার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হলে সেখানে হামাসের কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। হামাসকে গাজার শাসন থেকে সরে গিয়ে অস্ত্র হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরব লীগের পক্ষ থেকে প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করা হয়েছে। জুলাইয়ে জাতিসংঘের ১৭টি দেশ এই প্রস্তাবে সই করেছিল। এতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গাজার যুদ্ধ থামানো জরুরি বলে উল্লেখ আছে। হামাসকে অবশ্যই ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমতা ও অস্ত্র হস্তান্তর করতে হবে।
ফিলিস্তিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন আল-শেখ জাতিসংঘের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি সমর্থনকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করেছেন।
এই প্রস্তাব পাস হওয়ার সময় গাজায় ইসরায়েলের তীব্র হামলা অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, গত ২৩ মাসে ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরী দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে, যার ফলে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এদিকে, পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি একটি চুক্তিতে সই করেছেন, যার মাধ্যমে দখলকৃত এলাকায় ৩ হাজার ৪০০ নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হবে। এতে পশ্চিম তীর দ্বিখণ্ডিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ সংকীর্ণ হবে।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ বলেছেন, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, নেতানিয়াহুর পদক্ষেপ গোটা অঞ্চলকে ‘নরকের পথে ঠেলে দিচ্ছে’। একই সঙ্গে তিনি এমন দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যারা এখনও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়নি, দ্রুত তা করার জন্য।
: স্বাধীন ফিলিস্তিনের পথে ঐকমত্য: জাতিসংঘে বিপুল সমর্থন