সাতক্ষীরায় উৎপাদিত সুপারি এখন শুধু দেশের ভেতরে সীমাবদ্ধ নয়। এটি রপ্তানি হয়ে যাচ্ছে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। প্রতিবছর প্রায় ১০০ কোটি টাকার সুপারি বিদেশে যাচ্ছে। ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই অর্থকরী ফসলটি স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
রপ্তানি বাজারে চাহিদা, তবু দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা
যদিও বিদেশে সুপারির চাহিদা বাড়ছে, তবে চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। তারা বলছেন, পরিচর্যা ছাড়াই সুপারি গাছে ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে দাম কম। এর ফলে লাভ তুলনামূলকভাবে কমে যাচ্ছে।
বাজার, হাট এবং পাইকারি বিক্রি
সাতক্ষীরার বিভিন্ন হাটে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুপারির কেনাবেচা চলে।
এখানে চাষিরা বস্তা বা ঝুড়িতে করে সুপারি নিয়ে আসেন।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এই হাট থেকে সুপারি কিনে নেন।
পাটকেলঘাটা বাজারে সপ্তাহে দুই দিন বড় হাট বসে। এখানে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২০–২৫ লাখ টাকার সুপারি লেনদেন হয়।
উৎপাদন বাড়ছে, জমিও বাড়ছে
সাতক্ষীরায় এই বছর প্রায় ৪৫০ টন সুপারি উৎপাদন হয়েছে। বাজার মূল্য আনুমানিক ২০ কোটি টাকা।
এই ফসল চাষ হয়েছে ১,৩৫০ বিঘা জমিতে।
গত তিন বছরে চাষের জমি বেড়েছে ২০০ বিঘা।
বর্তমানে শুকনো সুপারির কেজি মূল্য ৪৫০ টাকা।
চাষির অভিজ্ঞতা: লাভ ভালো, কিন্তু বাজার অনিশ্চিত
মঙ্গলাবন্দকাটি গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, “আমার তিন বিঘা জমির সুপারি বাগানে প্রতিবছর ফল হয়।”
তিনি আরও জানান, এতে বছরে প্রায় ৭০–৮০ হাজার টাকা আয় হয়।
তার মতে, “নারিকেল বা অন্য গাছের পাশে সুপারি গাছ লাগানো সুবিধাজনক।”
কৃষি দপ্তরের পর্যবেক্ষণ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান,
“পান ও সুপারি দুটোই লাভজনক ফসল। সাতক্ষীরায় সুপারি চাষ বাড়ছে। কারণ, এতে খরচ কম কিন্তু আয় বেশি।”
তবে তিনি বলেন, “বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নত না হলে কৃষক সঠিক মূল্য পাবে না।”