বাংলাদেশ পুলিশের নতুন ইউনিফর্ম জুলাই চালু হয়েছে আজ থেকে। গণ-অভ্যুত্থানের সময় পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে গুলিবর্ষণ ও দমন-পীড়নের অভিযোগ ওঠার পর প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। দেশজুড়ে পুলিশ বাহিনীর সংস্কার, জবাবদিহি এবং বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন ও আন্দোলনকারীরা পুলিশের মনোভাব ও আচরণগত পরিবর্তনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশের কাঠামো ও ভাবমূর্তি উন্নয়নের অংশ হিসেবে বাহিনীর নতুন ইউনিফর্ম অনুমোদন করে। এর মধ্য দিয়ে পুলিশ বাহিনীর নতুন পরিচয়ের সূচনা হলো।
বাংলাদেশ পুলিশের নতুন ইউনিফর্ম আজ থেকে কার্যকর
আজ শনিবার (১৫ নভেম্বর) থেকে বাংলাদেশ পুলিশের পরিবর্তিত নতুন ইউনিফর্ম আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। তবে এটি এখনই সব সদস্যদের কাছে যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে রেঞ্জ ও মহানগর পুলিশে সীমিত পরিসরে নতুন পোশাক সরবরাহ শুরু হয়েছে।
পুরোনো নীল-সবুজ রঙের পরিবর্তে নতুন ডিজাইন ও নতুন রঙের ইউনিফর্ম ব্যবহার করবেন পুলিশ সদস্যরা। বাহিনীর অভ্যন্তরে যে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তার প্রতিফলন ইউনিফর্মেও ফুটে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপকমিশনার তালেবুর রহমান বলেন,
“আজ থেকেই পুলিশের নতুন পোশাক চালু হলো। ধাপে ধাপে সব সদস্যদের কাছে পৌঁছে যাবে।”
তার ভাষ্যমতে, নতুন ইউনিফর্ম সরবরাহের প্রক্রিয়া কয়েক ধাপে সম্পন্ন হবে।
ইউনিফর্মের সঙ্গে মানসিকতারও পরিবর্তন জরুরি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর), স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন যে শুধু বাহ্যিক পরিবর্তন নয়, পুলিশের আচরণগত ও মানসিক কাঠামোর পরিবর্তনও জরুরি। তিনি মন্তব্য করেন- “পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে সবার মন-মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে।”
তিনি আরও জানান, পুলিশ, র্যাব ও আনসারের জন্য তিন ধরনের নতুন ইউনিফর্ম নির্বাচন করা হয়েছে। এগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হবে, যাতে বাহিনীগুলোর মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।
নতুন ইউনিফর্মে পুলিশের ভাবমূর্তি পাল্টানোর প্রত্যাশা
নতুন পোশাক চালুর মাধ্যমে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং বাহিনীর সেবা-মনোভাব আরও উন্নত করার চেষ্টা চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু ইউনিফর্ম নয়, প্রশিক্ষণ, জবাবদিহি, দায়িত্ব পালনের পদ্ধতি এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়েই প্রকৃত পরিবর্তন সম্ভব।




