বাংলাদেশ কাতারে ইসরায়েলি হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে মুসলিম বিশ্বে একাত্মতা পুনর্ব্যক্ত করেছে। দোহায় অনুষ্ঠিত ওআইসি’র জরুরি আরব-ইসলামিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “কাতারের মাটিতে বিনা উসকানিতে চালানো ইসরায়েলি আক্রমণ শুধু একটি দেশের উপর হামলা নয়, বরং তা গোটা মুসলিম উম্মাহর মর্যাদার ওপর চরম আঘাত।”
সোমবার অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ মনে করে, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে আগ্রাসনের পথে হাঁটছে, যা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও সংস্থাটির প্রস্তাবসমূহকে প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই ধরনের হামলার জবাব দিতে মুসলিম বিশ্বকে কূটনৈতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সব দিক থেকেই সম্মিলিতভাবে অবস্থান নিতে হবে। ইসরায়েলকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে এবং এই বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধে চাপ সৃষ্টি করতে হবে।”
বিভক্তি নয়, ঐক্যের বাংলাদেশ চাই: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
মুসলিম নেতাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। ওআইসির মহাসচিব হুসেইন ইব্রাহিম তাহা এবং আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত তাদের বক্তব্যে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং সম্মিলিত নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
২৪টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এই সম্মেলনে সরাসরি অংশ নেন। অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিশ্ব নেতারা কাতারে ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। নেতারা পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান এবং গাজার জনগণের জন্য জরুরি খাদ্য ও সহায়তা প্রবেশে বাধাহীন পথ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান
সম্মেলনে নেতারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। বারবার মুসলিম রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনে নিরীহ মানুষ হত্যার ঘটনায় তারা আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপকে জরুরি বলে মনে করেন।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল
বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ফরহাদুল ইসলাম, ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এম জে এইচ জাবেদ এবং কাতারে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হযরত আলী খান।