চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই পার্বত্য চট্টগ্রামে ই-লার্নিং স্কুল প্রকল্প চালু করা হবে। মঙ্গলবার এক সভায় এ তথ্য জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।পার্বত্য চট্টগ্রামে ই-লার্নিং স্কুল প্রকল্প
নয়টি স্কুলে ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম
প্রথম ধাপে তিনটি জেলায় তিনটি করে মোট নয়টি স্কুলে ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে। এই জেলাগুলো হলো খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি এবং বান্দরবান।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার সুযোগ পাবে। ফলে, তারা পিছিয়ে পড়া পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।
সভায় ঘোষণা
ঢাকার বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এই ঘোষণা দেন। সভার শিরোনাম ছিল “ই-লার্নিং স্কুল প্রতিষ্ঠা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা”।
প্রযুক্তির ওপর জোর
তিনি বলেন, “ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), রোবটিকস, এবং প্রোগ্রামিং বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।”
এর ফলে, তারা আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা: ১০০টি স্কুল
উপদেষ্টা আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর দিকনির্দেশনায় একটি বৃহৎ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মোট ১০০টি ই-লার্নিং স্কুল স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “ভৌগোলিক বৈচিত্র্য এবং যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা প্রযুক্তির সাহায্যে শিক্ষার বৈষম্য কমাতে চাই।”
অবকাঠামো ও সংযোগ সুবিধা
প্রতিটি স্কুলে থাকবে সৌর প্যানেল, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, এবং ওয়াই-ফাই ভিত্তিক ইন্টারনেট সংযোগ।
ফলে, দুর্গম এলাকাতেও অনলাইন ক্লাস গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর হবে।
শিক্ষক সংকটের সমাধানে উদ্যোগ
এছাড়া, শহরে অবস্থানরত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও অভিজ্ঞ পেশাজীবীরা অনলাইনে স্বেচ্ছাশিক্ষক হিসেবে পাঠদান করতে পারবেন।
অন্যদিকে, বিজ্ঞান, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
শিক্ষার নতুন দিগন্ত
সুপ্রদীপ চাকমা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ই-লার্নিং স্কুলগুলো পার্বত্য অঞ্চলের শিশুদের জন্য গুণগত ও আধুনিক শিক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
তিনি বলেন, “জাতীয় পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা এখন ডিজিটাল পরিবেশে পড়াশোনা করতে পারবে।”
সভায় উপস্থিত অতিথিরা
সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক।
উপস্থিত ছিলেন:
- অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম
- মো. মনিরুল ইসলাম
- রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার
- খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা
- বান্দরবান জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. সানাই প্রু ত্রিপুরা
- যুগ্ম সচিব অতুল সরকার ও কংকন চাকমা
- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ইসরাত জাহান
- এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা।
সুত্রঃ বাসস




