আজ বুধবার (১২ নভেম্বর ২০২৫) একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হবে। হাইকোর্টে ২২ জন বিচারপতি স্থায়ী হচ্ছেন। তারা শপথ গ্রহণ করবেন। এটি বিচার বিভাগের জন্য সুসংবাদ। প্রধান বিচারপতি তাদের শপথ পড়াবেন। সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে অনুষ্ঠানটি হবে। দুপুর দেড়টায় শুরু হবে কার্যক্রম। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এটি প্রকাশ করেছে।
শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা
আজকের অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হবে। সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে এর আয়োজন করা হয়েছে। দুপুর দেড়টায় শপথ গ্রহণ শুরু হবে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। তিনি নবনিযুক্ত স্থায়ী বিচারপতিদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। এই মুহূর্তটি তাদের কর্মজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। উচ্চ আদালতের বিচার কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণ আরও বেগবান করবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। সংবিধান অনুযায়ী তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ প্রদান করেছেন। শপথ শেষে তাদের নিয়োগ কার্যকর হবে। এর ফলে দেশের বিচার ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। মানুষের আস্থা বৃদ্ধি পাবে বিচার বিভাগের প্রতি।
বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর ব্যতিক্রম
এবার ২৩ জন অতিরিক্ত বিচারপতির মধ্যে ২২ জন স্থায়ী হয়েছেন। বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী এই তালিকায় নেই। তাকে স্থায়ী বিচারপতি করা হয়নি। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বিএনপি নেতা নিতাই রায় চৌধুরীর সন্তান। তার বয়স ৪৫ বছর পূর্ণ হলে বিবেচনা করা হবে। তখন তাকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়েছে। অনেকে একে রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাখ্যা করছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি প্রক্রিয়াগত বিষয়। বিচারপতিদের স্থায়ী হওয়ার জন্য কিছু যোগ্যতা প্রয়োজন। বয়স তার মধ্যে একটি। নিয়ম অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তার অবস্থান কী হবে তা সময় বলে দেবে।
নিয়োগ প্রক্রিয়া ও প্রেক্ষাপট
এই বিচারপতিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বেশ কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর তাদের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সরকার এই নিয়োগ অনুমোদন করেছিল। অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে তারা দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের কর্মদক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই করা হয়েছে। এরপর স্থায়ী নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে তাদের স্থায়ী নিয়োগের কথা বলা হয়। সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে এই নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শ করেন। তারপর তিনি এই নিয়োগ প্রদান করেন। এটি একটি আইনগত প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এই প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নতুন বিচারপতিগণ ও তাদের অবদান
স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া ২২ জন বিচারপতি দক্ষ ও অভিজ্ঞ। তারা দীর্ঘদিন ধরে আইন পেশায় যুক্ত আছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। এছাড়াও আছেন সৈয়দ এনায়েত হোসেন ও মো. মনসুর আলম। বিচারপতি মুবিনা আসাফ ও আইনুন নাহার সিদ্দিকাও রয়েছেন। তাদের সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করেছেন। হাইকোর্ট বিভাগে তাদের যোগদান বিচার কার্যক্রমকে গতিশীল করবে। মামলার জট কমাতে তারা সহায়তা করবেন। নাগরিকদের দ্রুত বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। তাদের মধ্যে অনেকেই বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ছিলেন। তারা সাংবিধানিক বিষয়ে গভীর জ্ঞানের অধিকারী। দেশের আইন ব্যবস্থার উন্নয়নে তাদের অবদান থাকবে। তাদের নিরপেক্ষতা ও সততা বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। এই নিয়োগ বিচার বিভাগে নতুন শক্তির সঞ্চার করবে।
বিচার বিভাগের জন্য তাৎপর্য
এই ২২ জন বিচারপতির স্থায়ী নিয়োগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর ফলে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সংখ্যা বাড়ল। এটি বিচার বিভাগকে আরও শক্তিশালী করবে। দীর্ঘদিন ধরে বিচারপতি সংকট ছিল। এই নিয়োগ তা কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে। মামলার নিষ্পত্তির গতি বাড়বে। মানুষের আদালতের প্রতি আস্থা ফিরে আসবে। একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এটি অত্যন্ত জরুরি। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় একটি দক্ষ বিচার বিভাগ অপরিহার্য। নতুন বিচারপতিরা সেই লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবেন। তাদের নিয়োগ রাষ্ট্রের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে। এটি দেশের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
প্রশ্ন ও উত্তর
১. শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান কবে অনুষ্ঠিত হবে?
উত্তর: অনুষ্ঠানটি আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।
২. কতজন বিচারপতি স্থায়ী হচ্ছেন?
উত্তর: ২২ জন বিচারপতি স্থায়ী নিয়োগ পাচ্ছেন।
৩. শপথ পড়াবেন কে?
উত্তর: প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ শপথ পড়াবেন।
৪. অনুষ্ঠানটি কোথায় হবে?
উত্তর: অনুষ্ঠানটি সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে হবে।
৫. অনুষ্ঠান কয়টায় শুরু হবে?
উত্তর: দুপুর দেড়টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে।
৬. স্থায়ী তালিকা থেকে কাকে বাদ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
৭. বিচারপতি দেবাশীষকে কেন বাদ দেওয়া হলো?
উত্তর: তিনি ৪৫ বছর বয়স পূর্ণ করলে তাকে বিবেচনা করা হবে।
৮. অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে কবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল?
উত্তর: ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
৯. প্রথমে কতজনকে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল?
উত্তর: প্রথমে ২৩ জনকে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
১০. কোন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে?
উত্তর: আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
১১. সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
১২. বিচারপতিদের নিয়োগ দেন কে?
উত্তর: রাষ্ট্রপতি বিচারপতিদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
১৩. বর্তমান প্রধান বিচারপতি কে?
উত্তর: বর্তমান প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
১৪. নিয়োগ কার্যকর কবে হবে?
উত্তর: শপথ গ্রহণের পর থেকেই নিয়োগ কার্যকর হবে।
১৫. এই নিয়োগ হাইকোর্টের জন্য কী ব্যাপারে ইঙ্গিত দেয়?
উত্তর: এটি হাইকোর্টের বিচার কার্যক্রম আরও গতিশীল হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
১৬. এটি বিচার বিভাগের শক্তিকে কিভাবে প্রভাবিত করে?
উত্তর: এটি বিচার বিভাগকে আরও শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক করে তুলবে।
১৭. দাপ্তরিক বিজ্ঞপ্তি কোথায় প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তর: সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।




